করোনা ভাইরাস বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা অনেকটা থামিয়ে দিয়েছিল। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত পোশাক শিল্প মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল। একের পর এক অর্ডার বাতিল হয়ে যাওয়ায় এই শিল্পে তৈরি হয়েছিল বড় ধরনের অনিশ্চয়তা। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এই শিল্প ধাক্কা সামাল দিতে সক্ষম হয়েছে। ইউরোপ-আমেরিকার ক্রেতারা আবার ফিরছেন। নতুন নতুন অর্ডারও আসছে। রপ্তানিও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।
আগস্ট মাসের রপ্তানির চিত্র ব্যবসায়ীদেরকে অনেকটা আশাবাদী করে তুলেছে। এ মাসে ৩৩৬ কোটি ৩৬ লাখ মার্কিন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। করোনাকালে রপ্তানির তালিকায় মাস্ক ও পিপিই গাউন যুক্ত হয়েছে। ইউরোপ আমেরিকায় এখন এসব স্বাস্থ্য সামগ্রীর চাহিদা বেশি।
উল্লেখ করা যায়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে ক্রেতারা পোশাক রপ্তানির অর্ডার বাতিল করতে থাকেন। বাংলাদেশে তখন চলছিল অঘোষিত লকডাউন। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। কিছু কিছু কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই শুরু হয়। বন্ধ হয়ে যায় প্রায় তিনশো কারখানা। এক মাস বন্ধ থাকার পর আবার ধীরে ধীরে কারখানাগুলো খুলতে শুরু করে। যদিও মালিকদের সামনে অনিশ্চয়তার কালো মেঘ ছিল। এপ্রিলে মাত্র ৩৭ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। এরপর থেকে পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে।
গত জুনে শেষ হওয়া ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে দুই হাজার ৭৯৫ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। যা কিনা এর আগের বছরের তুলনায় ৬১৮ কোটি ডলার কম। করোনার দাপটের মধ্যেও প্রবাসী আয় বেড়েছে উল্লেখযোগ্যহারে। ১৯৬ কোটি ৩৯ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ ১৬ হাজার ৬৯৩ কোটি টাকা। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। এখন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হচ্ছে ৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, গত জুলাই ও আগস্ট মাস মিলিয়ে ৪৫৬ কোটি ৩৪ লাখ ডলারের আয় এসেছে।
ওদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৫৮২ জন। সবমিলিয়ে মারা গেছেন চার হাজার ৩৫১ জন। আক্রান্ত হয়েছেন তিন লাখ ১৭ হাজার ৫২৮ জন। সুস্থ হয়েছেন দুই লাখ ১১ হাজার ১৬ জন। ঢাকা থেকে মতিউর রহমান চৌধুরী