অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

সরকার সংসদে সাংবাদিকদের ঢোকাচ্ছে লটারি করে, ক্ষুব্ধ ভারতের সাংবাদিকরা


ভারতীয় সংসদের বর্তমান শীতকালীন অধিবেশন কভার করতে কতজন সাংবাদিক ভিতরে ঢুকতে পারবেন, সেই সংখ্যা বেঁধে দিতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সরকার ঠিক করেছে, লটারির মাধ্যমে স্থির করা হবে, কতজন যেতে পারবেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের উল্লেখ করে গত বছরই সরকার পার্লামেন্টে মিডিয়ার লোকজনের প্রবেশে কড়াকড়ি চালু করে।

গত সোমবার চলতি অধিবেশন শুরুর মুখে লটারি সিস্টেম চালু করে ঠিক হয়, লোকসভায় ৬০ ও রাজ্যসভায় ৩২ জন সাংবাদিক কভার করার জন্য ভিতরে যেতে পারবেন। সরকারি ও বাছাই করা মিডিয়া ও এজেন্সির জন্য যথাক্রমে ১১ ও ১০টি করে স্লট থাকবে।

ক্ষুব্ধ সাংবাদিকদের অভিযোগ, এটা খবরের সম্প্রচারে সেন্সর, মানুষের কাছে তথ্য পৌঁছনোয় বাধা দেওয়ার কৌশল। সরকারি সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পর থেকে সংসদের ভিতরে সাংবাদিকদের উপস্থিতি মারাত্মক কমেছে।

বৃহস্পতিবার এর প্রতিবাদে রাজধানীতে প্রেস ক্লাবে জমায়েত হয় সাংবাদিক, মিডিয়ার লোকজন। ‘প্রেসের স্বাধীনতা দীর্ঘজীবী হোক’ স্লোগান দিয়ে সংসদে অবাধ প্রবেশের অধিকার দাবি করেন তারা। বলেন, "২০২০-এ কোভিডের অজুহাতে এটা শুরু হয়েছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি মারাত্মক হয়ে উঠেছে। লটারি সিস্টেম চালু হওয়ায় ক্ষুদ্র সংবাদপত্রগুলি একেবারেই সংসদে ঢোকার সুযোগ পাচ্ছে না। শুধু সংসদ টিভি দেখে তো খবর কভার করা যায় না।" প্রেস ক্লাব বিবৃতি দিয়ে বলেছে, "বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রে সংসদে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে লটারি সিস্টেমে। ভারতের মতো সংসদীয় গণতন্ত্রের কাছে এটা খুবই বিপজ্জনক প্রবণতা।"

বিশ্বে প্রেসের স্বাধীনতার সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১৪২। আরও অবনমন হচ্ছে। কয়েক বছর আগেও ভারতের স্থান ছিল ১৩৬।

তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিবাদী সাংবাদিকদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে মিডিয়াকে সংসদের অধিবেশন কভার করার যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা ফেরানোর দাবি করেছে। মিডিয়ার ওপর বিধিনিষেধ গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে তৃণমূল বলেছে, সংসদে প্রবেশের সুযোগ সীমিত করে দেওয়ার ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছে গোটা তৃণমূল সংসদীয় পার্টি। সাংবাদিকদের পাশে আছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

XS
SM
MD
LG