অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সহজ জয়ে সিরিজ সমতা ফেরাল দক্ষিণ আফ্রিকা


জোহানেসবার্গে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ওয়ান ডে ম্যাচে ব্যাট করছেন দক্ষিণ আফ্রিকার কাইল ভেরিনি। মার্চ ২০, ২০২২। (ছবি- এপি)
জোহানেসবার্গে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ওয়ান ডে ম্যাচে ব্যাট করছেন দক্ষিণ আফ্রিকার কাইল ভেরিনি। মার্চ ২০, ২০২২। (ছবি- এপি)

সেঞ্চুরিয়নে সিরিজের প্রথম ম্যাচে হারের পর আজ জোহানেসবার্গে বাংলাদেশের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সফরকারীদের আজ তারা হারিয়েছে ৭ উইকেটে। প্রথমে ব্যাটিং করে বাংলাদেশের ১৯৪ রানের সংগ্রহ ৭৬ বল বাকি রেখে ৭ উইকেটে টপকে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

১৯৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে আসল কাজটা করে দেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানই। সেঞ্চুরিয়নের প্রথম ম্যাচে খেলেননি, আজ দলে ফিরেই দুর্দান্ত খেলেছেন কুইন্টন ডি কক। বাংলাদেশি বোলারদের লড়াইয়ের আশা শেষ করে দেন মূলত তিনিই। ইয়ানেমান মালানকে সঙ্গে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতে তারা তুলে ফেলেন ৮৬ রান। তবে এতে সিংহভাগ অবদানই ছিল ডি ককের। উদ্বোধনী জুটি ভাঙে মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে। ডি কক ফিফটি পান মাত্র ২৬ বলে। শেষ পর্যন্ত তিনি ৪১ বলে ৯ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় করেছেন ৬২ রান। সাকিবের বলে ডিপ মিড উইকেটে আফিফের দারুণ এক ক্যাচে ফেরেন ডি কক। মালান ৪০ বলে করেন ২৬। মিরাজের বলে বোল্ড হন তিনি।

উদ্বোধনী জুটিতেই জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর কাইল ভেরিনি আর টেম্বা বাভুমা উদ্বোধনী জুটির গড়ে দেওয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান। তৃতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৮২ রান। ভেরিনি ৭৬ বলে ৫৭ আর বাভুমা ৫২ বলে করেন ৩৭ । দলীয় ১৮১ রানে এই জুটি ভাঙেন সেই মিরাজই। এরপর রাসি ফন ডার ডুসেন আর ভেরিনি মিলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে পৌঁছে দেন জয়ের
বন্দরে।

এদিকে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটিংটা ভালো হয়নি। তামিম–লিটনের ওপেনিং জুটিতে প্রথম ম্যাচে এসেছিল ৯৪। আজ এই জুটি ৭ রানের বেশি টিকতে পারেননি। ১ রানে ফেরেন তামিম, লিটন অবশ্য আশা জাগিয়েছিলেন। ৩টি বাউন্ডারিতে ১৫ রান করেছিলেন। কিন্তু তাঁর ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে কাগিসো রাবাদার বলে উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি ককের ক্যাচ হয়ে। আগের ম্যাচে ৭৭ রান করা সাকিব আল হাসান আজ ফিরেছেন রানের খাতা না খুলেই। এই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শূন্য রানে আউট হলেন সাকিব। ইয়াসির আলী, মুশফিকুর রহিমও ফিরেছেন দ্রুত। ৩৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের টপ অর্ডারে আতঙ্কটা ছড়িয়েছেন প্রোটিয়া ফাস্ট বোলার কাগিসো রাবাদা। লিটন, সাকিব, ইয়াসিরকে ফেরান তিনি। তামিম আউট হন লুঙ্গি এনগিডির বলে, আজ দলে ঢোকা ওয়াইন পারনেল আউট করেন মুশফিকুর রহিমকে। ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ড সফরের পর আজই বিদেশের মাটিতে ৩৫ রানের
কমে ৫ উইকেট হারালো বাংলাদেশ।

৩৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর বাংলাদেশের ইনিংসটা মেরামত করেন আফিফ হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ। এ দুজন ৮৭ বলে ৬০ রান যোগ করেন। বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টার মুখেই ব্যক্তিগত ২৫ রানে বাঁ হাতি স্পিনার তাবরেজ শামসির বলে ইয়ানেমান মালানের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। এরপর আফিফের সঙ্গে যোগ দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দুই তরুণ এরপর যোগ করেন আরও ৮৬ রান। সপ্তম উইকেট জুটিতে এটি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড। আগের রেকর্ডটি ছিল ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে মোহাম্মদ আশরাফুল আর মাশরাফি বিন মুর্তজার—৫৪।

আফিফের ব্যাট থেকে এসেছে ১০৭ বলে ৭২ রান। ইনিংসে বাউন্ডারি ছিল ৯টি। তার ইনিংসটির সমাপ্তি টানেন রাবাদা। প্রোটিয়া ফাস্ট বোলারের বলে তুলে মারতে গিয়ে টেম্বা বাভুমার ক্যাচ হন তিনি। মিরাজ ফিফটি পাননি। তিনি ফেরেন রাবাদার বলেই মালানের ক্যাচ হয়ে। তিনি করেন ৪৯ বলে ৩৮। তার ইনিংসে ছিল ১টি বাউন্ডারি আর ২টি ছক্কা। রাবাদার শেষ ওভারে মাত্র ২ বলের ব্যবধানে আফিফ আর মিরাজের বিদায় বাংলাদেশের দুইশ পেরোনোর আশা শেষ করে দেয়। এরপর তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমানরা ব্যাট হাতে খুব বেশি কিছু করতে পারেননি। পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং করে বাংলাদেশ থামে ৯ উইকেটে ১৯৪ রান তুলেই। ২০১১ সালের পর এই প্রথম পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং করে বাংলাদেশের ইনিংস থামল দুইশ রানের নিচে।

দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ৫ উইকেট নিয়েছেন রাবাদা, ৩৯ রানের বিনিময়ে। এ ছাড়া একটি করে উইকেট নিয়েছেন এনগিডি, পার্নেল, শামসি।

XS
SM
MD
LG