চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ৯ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। মীরসরাই উপজেলা জোরারগঞ্জ থানার বারৈয়ারহাট বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার মো. শাহীন (১৭) উপজেলার বাড়বকুন্ড ইউনিয়নের ইয়াছিন নগর এলাকার নেজাম উদ্দিনের ছেলে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) মো.নুরুল আবছার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
র্যাব-৭ এর পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৩ মার্চ প্রতিদিনের মত শিশুটির মা-বাবা কাজের উদ্দ্যেশ্য বাড়ি থেকে বের হয়। ঘরে কেউ না থাকার সুযোগে শাহীন শিশু কন্যাটিকে ম্যাজিক লাইট দেখাবে বলে তার বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে। তার চিৎকার শুনে আশ-পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে শাহীন পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগী শিশুকে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করানো হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বর্তমানে সে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে আছে।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে ২৭ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি ধর্ষণ মামলা করেন।
এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, আসামিকে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
র্যাবের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথকভাবে এ নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক এবং বর্তমান আইজিপি বেনজীর আহমেদও রয়েছেন। এরইমধ্যে তার আমেরিকান ভিসাও বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া র্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র্যাব-৭ এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে বাংলাদেশে র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটেলিয়ান (র্যাব), মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধে সরকারের লড়াইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লংঘনের জন্য অভিযুক্ত। এতে বলা হয়েছে যে তারা আইনের শাসন, মানবাধিকারের মর্যাদা ও মৌলিক স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ক্ষুন্ন করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। র্যাব হচ্ছে ২০০৪ সালে গঠিত একটি সম্মিলিত টাস্ক ফোর্স। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধীদের কর্মকান্ড সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং সরকারের নির্দেশে তদন্ত পরিচালনা করা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বা এনজিওদের অভিযোগ হচ্ছে যে র্যাব ও বাংলাদেশের অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ ব্যক্তির গুম হয়ে যাওয়া এবং ২০১৮ সাল থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ী। কোন কোন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে এই সব ঘটনার শিকার হচ্ছে বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা।