অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

করোনা মোকাবেলার মূলে রয়েছে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন


পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন

কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বৈশ্বিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন,“করোনা মোকাবেলার মূলে রয়েছে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার।

জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি ইয়োশিমাসা এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিংকেনের যৌথ-সভাপতিত্বে, মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) কোভিড-১৯ গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যান (জিএপি)-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে, ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে যোগ দেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এসময় তিনি এ আহ্বান জানান।

আব্দুল মোমেন বলেন, “মহামারি করোনা মোকাবেলার মূলে রয়েছে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার। যখন উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগের প্রয়োজন, ঠিক সে সময় কোভিড-তাড়িত অর্থনৈতিক অস্থিরতার ভীতিতে, বিনিয়োগকারীরা এসব দেশ থেকে তাদের তহবিল সরিয়ে নিচ্ছেন। এর ফলে উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলোতে তহবিল ঘাটতির সৃষ্টি হচ্ছে।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহযোগিতা করার জন্য, উন্নত দেশসমূহ এবং বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাস্থ্যসেবাসহ অর্থনীতির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে রেয়াতি ঋণের প্রবাহ বাড়ানোর আহ্বান জানান। স্বল্প-কার্বন ভিত্তিক উন্নয়নে অর্থায়ন বাড়ানো এবং সবুজ প্রযুক্তি হস্তান্তরের ওপর জোর দেন তিনি।

আব্দুল মোমেন বলেন, “২৩ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে দ্রুত পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করেছে। যার ফলে ২০২০-২১ অর্থবছরে ছয় দশমিক ৯৪ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে।”

ড. মোমেন বলেন, “বাংলাদেশ নির্ধারিত সময়সীমার আগেই মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশকে টিকা দেয়ায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। মৃত্যুর হার বৈশ্বিক গড়ের থেকে নিচে রয়েছে। ২০২২ সালের মে মাসে নিক্কেই কোভিড-১৯ পুনরুদ্ধার সূচকে ১২১ দেশের মধ্যে পঞ্চম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম স্থান অর্জন কোভিড ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের অসামান্য সাফল্যের প্রতিফলন।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, “করোনা মোকাবেলায় কোভ্যাক্স ব্যবস্থার সাফল্যই প্রমাণ করে বৈশ্বিক সঙ্কট মোকাবেয় বহুপাক্ষিক ব্যবস্থা কতটা কার্যকর।”

আব্দুল মোমেন অতিমারি মোকাবেলায় কয়েকটি বৈশ্বিক কার্যক্রমের ওপর জোর দেন। যার মধ্যে রয়েছে; কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনকে ‘বৈশ্বিক পাবলিক পণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করার মাধ্যমে ভ্যাক্সিনকে সুলভ ও সহজলভ্য করা; বাংলাদেশের মতো তুলনামূলকভাবে উন্নত ফার্মাসিউটিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারিং ভিতসমৃদ্ধ দক্ষিণের দেশগুলোকে মেধাস্বত্ত্ব অধিকার (আইপিআর) প্রদান এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের উপযুক্ত বিধানের মাধ্যমে ভ্যাকসিন, টেস্টিং সামগ্রী এবং প্রতিষেধক তৈরিতে তাদের নিজস্ব সক্ষমতা তৈরিতে সহায়তা করা; বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং উন্নত দেশগুলোর সহায়তায়, কোভিডের নতুন প্রকরণগুলো মোকাবেলাসহ জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধির উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা কাঠামোকে চলমান ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপযোগী করতে নকশা প্রণয়নে লৈঙ্গিক ও ভৌগলিক ভারসাম্যের ভিত্তিতে বিশ্ব নেতাদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল গঠন করা।

বৈঠকে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, যুক্তরাষ্ট্রের পরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক স্বাগত বক্তব্য দেন। এরপর বক্তব্য দেন, বিশ্বের ১৪ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট এবং বেশ কয়েকটি দেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।

XS
SM
MD
LG