অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত


শীতে কাঁপছে বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯ টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা বাংলাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান জানান, বৃহস্পতিবার বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৪ শতাংশ। আগামীকাল (৩০ ডিসেম্বর) তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে জানান তিনি।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের দেখা মিললেও, হিমেল হাওয়ার কারনে শীতের তীব্রতা কমেনি মোটেও। ফলে সমস্যায় পড়েছে এলাকার মানুষ। তীব্র শীত ও হিম-হাওয়া মিলিয়ে ব্যাহত হচ্ছে চুয়াডাঙ্গার জীবনযাত্রা। বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ।

সড়কের মোড়ে, চায়ের দোকানে শীত নিবারণের চেষ্টায় খড়কুটো জ্বালিয়ে উত্তাপ নিতে দেখা গেছে নিম্ন আয়ের মানুষদের। শীতের কারণে জরুরি কাজ ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। শীত থেকে বাঁচতে সরকারি সহযোগিতা চেয়েছেন সাধারণ মানুষ।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন জানান, তীব্র শীতে শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে হাসপাতালের আউটডোরে প্রচুর রোগী আসছেন। এছাড়া, প্রতিদিন তিনশতাধিক শিশু আউটডোরে চিকিৎসা নিচ্ছে। শীতজনিত কারণে নিউমোনিয়া রোগী সংখ্যা বাড়ছে।

রিকশাচালক মাসুম বলেন, “পেটের দায়ে কাজে বের হলেও প্যাসেঞ্জার পাওয়া যাচ্ছে না। বাতাসে পুরো শরীর কাঁপছে। এমন আবহাওয়া আরও কয়েকদিন থাকলে কাজে বের হওয়া যাবে না।” ইউসুফ নামের এক দিনমজুর বলেন, “ভোরে কাজে যেতে পারিনি। এভাবে ঠাণ্ডা পড়লে কাজে যাওয়া সম্ভব হবেনা। না খেয়ে দিন যাবে।”

সাজু নামের একজন হোটেল কর্মচারি বলেন, “প্রতিদিন সকালে নাশতার জন্য হোটেলে প্রচুর চাপ থাকে। এজন্য ফজরের আজানের পর থেকেই কাজ করতে হয়। ভোরে পানিতে হাত দিলে মনে হয় হাত অবশ হয়ে যাচ্ছে। তারপরও পেটের দায়ে কাজ করছি।”

এদিকে, বৃহস্পতিবারও ঘন কুয়াশার কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে সাত ঘন্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এতে পদ্মার উভয় পাড়ে দুই শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। দীর্ঘসময় ফেরি বন্ধ থাকায়, পদ্মার দুই পাড়ে আটকা পড়ে শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক, কয়েকশ’ যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস। পারাপারের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা পড়েন দুর্ভোগে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা সেক্টরের ম্যানেজার মহিউদ্দিন রাসেল জানান, মধ্যরাত থেকে কুয়াশা বাড়তে থাকে। রাত ২টা দিকে কুয়াশার তীব্রতা বেড়ে পুরো নৌপথ ঢেকে যায়। দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এসময় মাঝ পদ্মায় যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে নোঙর করে রাখা হয় পাঁচটি ফেরি। এছাড়া ছোটবড় মিলে আরও ৯টি ফেরিকে উভয় ঘাটে আটকিয়ে রাখা হয়।

XS
SM
MD
LG