অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানাল জুলাইতেই চাঁদে পাড়ি দেবে ভারতের চন্দ্রযান-৩


জুলাইতেই চাঁদে পাড়ি দেবে ভারতের চন্দ্রযান-৩
জুলাইতেই চাঁদে পাড়ি দেবে ভারতের চন্দ্রযান-৩

বহু আশা জাগিয়েছিল ভারতের 'ল্যান্ডার'। ইতিহাসে প্রথমবার একেবারে দিশি প্রযুক্তিতে তৈরি ভারতীয় ‘ল্যান্ডার’ নেমে আসছে চাঁদের মাটিতে, বেরিয়ে আসতে চলছে একটি রোভার। মঙ্গলে নাসার ‘কিউরিওসিটি’-র মতই চাঁদের মাটিতে ঘুরে বেড়ানোর কথা ছিল ভারতের ‘প্রজ্ঞান’-এর। ছয় চাকার ২৭ কিলো ওজনের এই রোভার নেমে আসত ‘বিক্রম’ ল্যান্ডারে চড়ে।

কিন্তু শেষ অবধি আর সফল হয়নি তা। সফটওয়্যারের একটি অঙ্কের ভুলে ল্যান্ডার তার ক্ষেপণপথ বা ট্র্যাজেকটরি থেকে সরে আসে, ফলে ‘সফট ল্যান্ডিং’ বা ধীরেসুস্থে গতি কমিয়ে নেমে আসার বদলে ‘ক্র্যাশ ল্যান্ডিং’ হয়ে যায়, ল্যান্ডারটি প্রবল বেগে আছড়ে পড়ে চুরমার হয়ে যায়। খাতায় কলমে কক্ষপথে ‘অরবিটার’ থাকলেও মিশনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যর্থ হয় ইসরো-র।

এবার আর সেই ভুল করতে চাইছে না ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। চেয়ারম্যান এস সোমনাথ জানিয়ে দিলেন, আগামী জুলাইতেই চন্দ্রযানের তৃতীয় অভিযান, চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণ করতে চলেছে ইসরো। মাত্র দুই মাসের মধ্যেই তা চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছবে। কিন্তু এবারের অভিযানে কোনও ‘অরবিটার’ থাকছে না। অর্থাৎ, আগের অভিযান চলেছিল সেই ছয়-সাতের দশকের ‘অ্যাপোলো’ অভিযানের ধাঁচে। সমগ্র মহাকাশযানটি উৎক্ষেপণের পর পৌঁছে যাবে চাঁদের কক্ষপথে। তারপর তার মূল অংশটি চাঁদের চারপাশে ঘুরপাক খাবে, আর ‘ল্যান্ডার’ অংশটি বিচ্ছিন্ন হয়ে নেমে আসবে চাঁদের মাটিতে।

কিন্তু এবারের অভিযানে কোনও ‘অরবিটার’ রাখছে না ইসরো। সরাসরি পুরো মহাকাশযানই নেমে আসবে চাঁদে। এই বিষয়ে জাপান ও ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির সঙ্গে সহযোগিতায় রয়েছেন ইসরোর ইঞ্জিনিয়াররা। ইসরো জানিয়েছে, চন্দ্রযান-৩ নেমে আসবে চাঁদের দক্ষিণ মেরু বা ‘লুনার সাউথ পোলে’। যা কার্যত নজিরবিহীন।

একাধিক পরীক্ষানিরীক্ষার চিন্তা রয়েছে ইসরো-র। চন্দ্রযান-৩ চাঁদের পৃষ্ঠের রেগোলিথ, চাঁদের পৃষ্ঠের কম্পন ও সান্দ্রতার তাপীয়-ভৌত অবস্থা নিয়ে গবেষণা চালাবে। চন্দ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা, সূর্যালোকের সঙ্গে বিক্রিয়া ইত্যাদি বিভিন্ন চরম পরিস্থিতির সঙ্গে যাতে যন্ত্রপাতি মানিয়ে নিতে পারে, তার জন্য দফায় দফায় মহড়া চালাচ্ছে ইসরো। রোভারে থাকছে ‘আলফা কণা এক্স রে স্পেকট্রোমিটার’ এবং ‘লেজার ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কোপি’। যাতে ল্যান্ডিং বা অবতরণ ক্ষেত্রের মৌলিক নানা বৈশিষ্ট্য বিষয়ক তথ্য সরাসরি পাঠিয়ে দেবে কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে, ইসরোর সদর দফতরে।

আপাতত ১২ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ন স্পেস সেন্টার থেকে চন্দ্রযান-৩ এর উৎক্ষেপণের তারিখ ঠিক হয়েছে। একে নিয়ে যাবে ইসরোর সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট ‘লঞ্চ ভেহিকল মার্ক থ্রি।’ যার আগের নাম ছিল ‘জিএসএলভি মার্ক থ্রি’। ত্রিস্তরীয় এই রকেটেই চন্দ্রযান চলে যাবে তার পার্থিব কক্ষপথে, তারপর গতি বাড়িয়ে যাত্রা শুরু করবে চাঁদের দিকে।

XS
SM
MD
LG