অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণ, সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলসহ ১০ গ্রাম প্লাবিত


পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণ, সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলসহ ১০ গ্রাম প্লাবিত

পাঁচ দিনের টানা বর্ষণ এবং ভারতের মেঘালয় থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে সুনামগঞ্জ জেলার নদ-নদীর। এর ফলে সুনামগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। প্লাবিত হয়েছে দোয়ারাবাজার উপজেলার অন্তত ১০টি গ্রাম।

দোয়ারাবাজারের সুরমা, চেলা, মরা চেলা, চিলাই, চলতি, কালিউরি, খাসিয়ামারা-সহ বিভিন্ন নদ-নদীর উপচেপড়া পানিতে হাওর, খাল-বিল, মাঠঘাট ভরে গেছে।বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা।

পাহাড়ি ঢলের চাপে রবিবার (২ জুলাই) সন্ধ্যায় দোয়ারাবাজার উপজেলার চিলাই নদীর রাবারড্যাম সংলগ্ন ক্যাম্পের ঘাট এলাকায় বাঁধ ভেঙে বগুলা বাজার ক্যাম্পের ঘাট, আন্দাইরগাঁও, বগুলা, চান্দের ঘাট, সোনাচড়া, নোয়াগাঁও, রামনগর, তেরাকুড়ি ও কান্দাগাঁওসহ বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

সুরমা নদীর জল বেড়ে, দোয়ারাবাজার-টেংরাটিলা-মহব্বতপুর সড়কের ওপর শরিফপুর সাইডিংঘাট এলাকায় হাটু সমান পানি। স্রোতের কারণে যান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে উপজেলা সদরের সঙ্গে নরসিংপুর, বাংলাবাজার, বগুলাবাজার, লক্ষীপুর ও সুরমা ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক যোগাযোগ।

বানের জলে তলিয়ে গেছে শত শত হেক্টর জমির ফসল ও আমনের বীজতলা। দ্রুত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায়, বেশকিছু মাছের পুকুর তলিয়ে গেছে।

সুনামগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার জানান, “ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাত বন্ধ না হলে, অচিরেই জেলার সকল উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।”

দোয়ারাবাজারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফ মোর্শেদ মিশু বলেন, “বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে, জরুরি ক্ষেত্রে দূর্যোগ মোকাবেলায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা, ত্রাণ বিতরণসহ সর্বক্ষেত্রে আমাদের মনিটরিং ব্যবস্থা সচল রয়েছে।”

সিরাজগঞ্জে যমুনা তীর ভাঙন

এদিকে, সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচিতে যমুনা নদীর ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে খিদ্রচাপড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ও আশপাশের এলাকার অর্ধশতাধিক বাড়ি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেলকুচি উপজেলার মেহেরনগর থেকে চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুর স্পার বাঁধ পর্যন্ত, যমুনার ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজে গাফিলতি এবং প্রকল্প এলাকার কাছাকাছি স্থান থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এই ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে।”

গত কয়েকদিন ধরে যমুনায় পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করায়, নদীতে জিও ব্যাগ নিক্ষেপ বন্ধ থাকায় ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

খিদ্রচাপড়ী বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফরিদ আহম্মেদ নয়ন জানান, এই বিদ্যালয় ১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ১৪২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রায় ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০০৮ সালে বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ও আশ্রয় কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়। বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই বিদ্যালয় ভবনটি ভাঙনের হুমকিতে পড়ে। এখন পাঠদান করার মতো আর কোন জায়গা রইলো না।”

যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে বর্ষার স্বাভাবিক ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

XS
SM
MD
LG