বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) দেশের প্রথম ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে-এর বিমানবন্দর-ফার্মগেট ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার অংশের উদ্বোধন করেছেন। এই প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে যান চলাচলের জন্য এটি উন্মুক্ত করা হবে।
এই এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে একটি গাড়ি ঘন্টায় ৬০ কিলোমিটার বেগে, বিমানবন্দর এলাকার কাওলা থেকে ফার্মগেটে পৌঁছতে ১০ মিনিট সময় লাগবে। বিদেশি বিনিয়োগে, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) আওতায় পরিবহন খাতে এটি প্রথম প্রকল্প।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী গাড়িটি টোল প্লাজায় টোল পরিশোধের পর, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে, কাওলা এলাকায় উত্তর প্রান্ত থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে প্রবেশ করে। শেখ হাসিনা আগারগাঁওয়ের পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে নাগরিক সমাবেশে যোগ দিতে তেজগাঁও এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নামেন।
প্রকল্প কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতিদিন প্রায় ৮০ হাজার যানবাহন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যেতে পারবে। এক্সপ্রেসওয়েটি, ঢাকা শহরের উত্তর অংশের সঙ্গে; মধ্য, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব অংশের যোগাযোগ উন্নত করবে এবং শহরের অভ্যন্তরে এবং আশেপাশে ট্রাফিক সক্ষমতা বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ প্রকল্প শেষ হলে, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে, রাজধানীর কাওলা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী এলাকা হয়ে, কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী এলাকায় যানবাহন চলাচল করবে।
এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করার জন্য যানবাহনগুলোকে টোল দিতে হবে। চারটি ক্যাটাগরিতে টোল আদায় করা হবে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী; প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস (১৬ আসনের কম) এবং মিনি-ট্রাক (৩ টনের কম) ৮০ টাকা, মাঝারি আকারের ট্রাক (৬ চাকা পর্যন্ত) এবং ৬ চাকার বেশি বড় ট্রাক যথাক্রমে ৩২০ টাকা এবং ৪০০ টাকা করে টোল দিতে হবে।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা-ফার্মগেট অংশে ১৬ বা তার বেশি আসন বিশিষ্ট সব বাস ও মিনিবাসের টোল হবে ১৬০ টাকা। এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল, সাইকেল ও থ্রি-হুইলার চলাচলের অনুমতি দেয়া হবে না।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প নেয়া হয়েছিলো ২০১১ সালে। ২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, প্রকল্পের বিনিয়োগকারী কোম্পানি ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কোম্পানি লিমিটেডের সাথে একটি সংশোধিত চুক্তি সই করে।
প্রকল্পটি, থাইল্যান্ড ভিত্তিক ইতালীয় প্রতিষ্ঠান- থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড (৫১ শতাংশ), চায়না শানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ (৩৪ শতাংশ) এবং সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড (১৫ শতাংশ) এর অংশীদারিত্বে বাস্তবায়ন হচ্ছে।