অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশে এপ্রিলের শুরুতে করোনা ভাইরাস আরো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে


করোনা সন্দেহে যুক্তরাজ্য ফেরত এক প্রবাসী রোববার সিলেটের শহীদ শামছুদ্দিন হাসপাতালে মারা গেছেন। ৪ঠা মার্চ লন্ডন থেকে তিনি সিলেটে আসেন। করোনা উপসর্গ দেখা দেয়ায় গত শুক্রবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। করোনা শনাক্তে নমুনা সংগ্রহের জন্য ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ দল সিলেট পৌঁছার আগেই তার মৃত্যু হয়। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইউনুছুর রহমান জানিয়েছেন, দুই দিনের মধ্যে জানা যাবে ঐ নারী করোনা আক্রান্ত ছিলেন কিনা।

রোগ শনাক্ত না হলেও করোনা ভাইরাসে মৃত ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য নিয়ম অনুযায়ী স্থানীয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ঐ নারীকে দাফন করা হয়। সতর্কতার অংশ হিসেবে ষাটোর্ধ্ব এই নারীর পরিবারের অন্য সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের রোগের উপসর্গের সঙ্গে করোনা ভাইরাসের উপসর্গের অনেকটা মিল ছিল। তাদের একজন ভারত থেকে সম্প্রতি দেশে আসেন। চিকিৎসকরা বলছেন, স্থানীয়ভাবে করোনা পরীক্ষার সুযোগ না থাকায় তাদের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় আরো তিনজন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্তের তথ্য জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর। আক্রান্ত তিনজনের দুইজনই বিদেশ ফেরত।

ক্রমাগত রোগী বাড়ায় সরকার সতর্কতামূলক আরো কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। সব স্থলবন্দর দিয়ে বিদেশিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আসন্ন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সংসদ টেলিভিশনের মাধ্যমে ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ক্লাস প্রচারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে মন্ত্রীসভার সোমবারের নিয়মিত বৈঠক স্থগিত করা হয়েছে। পবিত্র শবে-মেরাজের রাতে মসজিদে না গিয়ে বাসায় ইবাদত করতে বলা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি। সরকারি কর্মকর্তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে সার্বক্ষণিক অবস্থানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নিন্ম আদালতের কার্যক্রম সীমিত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

আগামী মাসের শুরুতে করোনা আরো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে এবং ব্যাপক প্রাণহানি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র সাঈদ খোকন।

ওদিকে বৃটেন ছাড়া অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়ায় ঢাকায় অবস্থানরত ইউরোপীয় কূটনীতিকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। তারা জানতে চেয়েছেন, জোটভুক্ত ২৭ রাষ্ট্রের কূটনীতিকদের ঢাকা ছাড়ার বিকল্প ব্যবস্থা কি। তারা এও জানতে চেয়েছেন, কোন কূটনীতিক যদি আক্রান্ত হন তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা আছে কিনা? পররাষ্ট্র মন্ত্রী অবশ্য বলছেন, ঢাকা লন্ডন রুট চালু থাকায় কূটনীতিকরা এ সুযোগ নিতে পারেন। বিকল্প হিসেবে ভাড়া বিমানেও তারা দেশে ফিরতে পারবেন।
ঢাকা থেকে মতিউর রহমান চৌধুরী'র রিপোর্ট।

XS
SM
MD
LG