অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

নারায়ণগঞ্জের কারখানায়  অগ্নিকান্ডের তদন্ত রিপোর্টে উঠে এসেছে শিশু শ্রমিক ব্যবহারের তথ্য 


নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুড ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগার সময় ছুটে আসেন লোকজন। ফাইল ফটো- রয়টার্স
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুড ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগার সময় ছুটে আসেন লোকজন। ফাইল ফটো- রয়টার্স

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জ জেলায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া হাসেম ফুডস এন্ড বেভারেজ কারখানায় শিশু শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানোর তথ্য পাওয়া গেছে।  

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জ জেলায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া হাসেম ফুডস এন্ড বেভারেজ কারখানায় শিশু শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানোর তথ্য পাওয়া গেছে।

এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে জেলা প্রশাসন যে কমিটি গঠন করেছিল তা কারখানাটিতে শিশু শ্রমিকদের কাজ করার এই তথ্য পেয়েছে। গত জুলাই মাসে কারখানাটিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৫২ জন শ্রমিক নিহত এবং অপর ৩৬ জন আহত হন।

মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহর কাছে ভয়েস অফ আমেরিকার পক্ষে কারখানাটিতে শিশু শ্রমিক নিয়োগের যে অভিযোগ উঠেছিল তার কোন সত্যতা কমিটি পেয়েছে কিনা সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আহত শ্রমিক ও নিহত শ্রমিকদের পরিবার এবং কারখানার অন্যান্য কর্মরত শ্রমিকদের সাথে কথা বলে কমিটি কারখানাটিতে শিশু শ্রমিকের উপস্থিতির তথ্য পেয়েছে। এছাড়া অগ্নি কাণ্ডের ঘটনার পর কারখানা থেকে যে সমস্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল তার মধ্যে ১৩ বছর বয়সী এক শিশুর লাশও পাওয়া গেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন তদন্ত কমিটির তৈরি করা ৪৪ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে শ্রমিক নিরাপত্তা ও শিশুশ্রমের ওপর ২০টি সুপারিশ করা হয়েছে যার মধ্যে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরকে আরও কার্যকর এবং শক্তিশালী করার বিষয়টিও রয়েছে। তিনি বলেন তদন্ত প্রতিবেদনটি শ্রম মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো হবে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত ও ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার পক্ষ থেকে সংবাদ মাধ্যমকে বলা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে যদি শিশুশ্রমের বিষয়টির প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী জিয়া হাবিব শিশু শ্রম নিয়ে ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন দেশের মানবাধিকার এবং শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন সমূহ অনেকদিন যাবত শিশু শ্রম নির্মূলের দাবি জানিয়ে আসছে। তিনি বলেন দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ শিশু শ্রম বন্ধে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হলেও মানুষের দারিদ্রতার সুযোগে শিল্প-কারখানা ও ওয়ার্কশপের মালিকরা আইন অমান্য করে শিশু শ্রমিকদের কাজে লাগাচ্ছে।

কল কারখানায় শিশু শ্রমসহ অন্যান্য বিষয়ে নজরদারি করার জন্য যে সরকারি সংস্থা রয়েছে তাদের গাফেলতির কারণে শিশু শ্রম বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে তিনি অভিযোগ করেন। জিয়া হাবিব বলেন শিশু শ্রম বন্ধ না হওয়ায় অনেক শিশু শ্রমিকরা বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষাসহ বিভিন্ন মৌলিক অধিকার থেকে। তিনি বলেন শিশু শ্রম বন্ধে সকল সচেতন নাগরিকের সোচ্চার হওয়া উচিত এবং সরকারের উচিত আইনের কঠোর বাস্তবায়ন করে দেশ থেকে শিশু শ্রম নির্মূল করা।

XS
SM
MD
LG