বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণে উর্ধগতি। পরিস্থিতি ক্রমেই নাজুক হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ বেড়েছে গড়ে ২০ শতাংশেরও বেশি। আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৭২৭ জন। গত ৭১ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। একই সময়ে মারা গেছেন ৮৫ জন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তরফে জনগণকে সতর্ক করা হয়েছে। বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে, সরকারের নেয়া পদক্ষেপে সহযোগিতা না করলে পরিস্থিতি শোচনীয় হতে পারে। স্বাস্থ্য দপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেছেন, বাংলাদেশে প্রথম থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের হার ১৩ শতাংশের বেশি ছিল না। কিন্তু গত এক সপ্তাহে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। সংক্রমণে এখন উর্ধগতি । মৃত্যুর হারও বেড়ে চলেছে। অধ্যাপক রোবেদ আমিন বিভাগগুলোর একটি চিত্র তুলে ধরেন নিয়মিত করোনা বুলেটিনে। তিনি জানান, বরিশাল বিভাগে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সংক্রমণ ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে। খুলনাতেও একই চিত্র। চট্টগ্রামে ৪২ শতাংশ। ময়মনসিংহ বিভাগে ৬১ দশমিক ৯ শতাংশ রেকর্ড করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলায়। সেখানে একদিনে শনাক্তের হার ৯০ দশমিক ১৪ শতাংশ। এই জেলায় জনসংখ্যা প্রায় ১৯ লাখ। করোনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত জাতীয় কারিগরি কমিটি এই পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে বর্ণনা করেছে। এই পরিস্থিতিতে ঢাকাকে কিছুটা মুক্ত রাখার জন্য আশপাশের সাত জেলায় লকডাউন কার্যকর করা হয়েছে। যদিও ফাঁকফোঁকর দিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ ঢাকায় আসছেন। ঢাকাতেও রোগী বাড়ছে। মুগদা ও কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে গত এক সপ্তাহের তুলনায় গড়ে ৪০ ভাগ রোগী বেড়েছে। ঢাকায় এখনও শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৬০ ভাগ। স্বাস্থ্য দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে।
জাতীয় কারিগরি কমিটির পরবর্তী বৈঠকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। স্বাস্থ্য দপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেছেন, পরিস্থিতি যদি নাজুক হয় এবং প্রতিটি জেলায় যদি সংক্রমণ ২০ শতাংশের ওপরে চলে যায়, তখন সারা দেশে লকডাউন দেয়া হতে পারে।
ওদিকে চীনের আইএমবি ক্যামস-এর করোনার টিকা বাংলাদেশে তৃতীয় ট্রায়ালের জন্য অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল গবেষণা পরিষদ। চীনের ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল বায়োলজি অব দ্য চাইনিজ একাডেমি অব মেডিকেল সায়েন্স-আইএমবি ক্যামস-এর দেশীয় এজেন্ট হিসেবে রয়েছে ওয়ান ফার্মা।
বাংলাদেশের বঙ্গভ্যাক্সসহ তিনটি টিকার ট্রায়ালের আবেদন করা হয় বিএমআরসিতে। আইএমবি ক্যামস ছাড়া অন্য দুটির বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।