বাংলাদেশে করোনার গ্রাফ ফের ঊর্ধ্বমুখী। চারদিন ধরে সংক্রমণ তিন এর ওপরে। গত এক মাস গ্রাফ ছিল নিম্নমুখী। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৬১৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগে ২৫শে জানুয়ারি ৬০২ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর জানিয়েছিল স্বাস্থ্য দপ্তর। টিকা নেয়ার পরও অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন। কেউ কেউ মারাও যাচ্ছেন। টিকা নেয়ার ১১দিন পর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন লেখক, সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। জন স্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, টিকা নিয়ে অনেকেই মনে করছেন নিরাপদ হয়ে গেছেন। স্বাস্থ্যবিধির কোনো তোয়াক্কা করছেন না। একারণেই টিকা নেয়ার পরও অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন।
আইইডিসিআরের সাবেক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও সহকারী উপদেষ্টা ডা. মোশতাক হোসেন মনে করেন, টিকা নেয়ার তিন সপ্তাহ এবং দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার ১৪ দিন পর মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়া শুরু করে। তিনি বলেছেন, দেশের জনসংখ্যার কমপক্ষে ৭০ ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে হবে। বয়স্কদের আগে টিকা দেয়ার ওপর জোর দেন এই স্বাস্থ্যবিজ্ঞানী। বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলামের মতে, আমাদের দেশে শীতকালীন রেসপেটরি ভাইরাস আগে থেকেই ছিল। ফলে করোনাভাইরাস ঢুকতে পারেনি। গরম শুরু হওয়ায় সংক্রমণ বাড়তির দিকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ গ্রহণের কমপক্ষে দুই সপ্তাহ পর থেকে সর্বোচ্চ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। এসময়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে ভ্যাকসিন নেয়ার পরও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত ৭ই ফেব্রুয়ারি দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। বুধবার পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন ৩৪ লাখ ৬৪ হাজার মানুষ। পর্যায়ক্রমে প্রায় ১২ কোটি মানুষকে টিকা দিতে হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, আগামী জুলাই পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমে কোভ্যাক্সের এক কোটি ৯ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আসার কথা রয়েছে। ভারত থেকে আসবে তিন কোটি ডোজ। ইতিমধ্যেই ৭০ লাখ ডোজ টিকা এসেছে। এ মাসে ৪০ লাখ ডোজ টিকা আসবে এমনটাই বলা হয়েছে।
ওদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।