অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতে আটক বাংলাদেশের পুলিশ অফিসার সোহেল রানাকে নিয়ে নানা প্রশ্ন


ভারতে আটক বাংলাদেশের পুলিশ অফিসার সোহেল রানা
ভারতে আটক বাংলাদেশের পুলিশ অফিসার সোহেল রানা

পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানাকে নিয়ে নানান প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে - কেন তিনি পালিয়ে ভারত যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন? তার শেষ গন্তব্যই বা কোথায় ছিল?

বিএসএফ'র কাছে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অনুযায়ী, আপাতত তার গন্তব্য ছিল নেপাল। তবে তার পাসপোর্টে একাধিক দেশের ভিসা ছিল। এর মধ্যে থাইল্যান্ড, সৌদি আরব, চীন ও ইউরোপের ভিসা। এখনো স্পষ্ট নয় তিনি কোন দেশে যেতে চেয়েছিলেন। ঢাকায় তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ভারতে রয়েছেন রিমান্ডে।

বলা হচ্ছে, একাধিক ব্যবসার সঙ্গে তিনি সরাসরি জড়িত। মানব পাচারের সঙ্গেও তার সম্পৃক্ততার কথা শোনা যাচ্ছে। ঢাকায় বাণিজ্যিক ভবন রয়েছে একটি, যার মূল্য প্রায় দশ কোটি টাকা। ঢাকার অভিজাত এলাকায় ১২টি ফ্ল্যাট, বেশ কয়েকটি জমির প্লট, কয়েকটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির ডিলারশিপ রয়েছে তার। একাধিক অভিজাত ক্লাবের সদস্যপদ নিয়েছেন প্রভাব খাটিয়ে। যার মূল্য কয়েক কোটি টাকা। বিদেশেও রয়েছে তার বিপুল সম্পদ।

সংবাদমাধ্যমের খবর- পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে একটি সুপারশপ, মদের বার ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এখানেই শেষ নয়। কাঠমান্ডু, প্যারিস, ম্যানিলা ও থাইল্যান্ডে তার রয়েছে জমজমাট ব্যবসা। ঢাকায় কূটনৈতিক জোনে দায়িত্বে থাকাকালে দূতাবাস কর্মীদের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে জানা যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পুলিশ অফিসার বলেন, কীভাবে এত টাকার মালিক হলেন সোহেল রানা তা সত্যিই অবিশ্বাস্য। ই-কমার্স ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন সোহেল রানা। এক লাখ গ্রাহকের কাছ থেকে নানা ফন্দিফিকির করে ১১শ' কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে মামলা রুজুর পরেই তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

বিএসএফ সূত্র জানিয়েছে, দশ হাজার টাকার বিনিময়ে একজন মানব পাচারকারীর সহযোগিতায় তিনি সীমান্ত পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করছিলেন। ই-অরেঞ্জের আমলনামা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এরই মধ্যে দুটি হিসাব থেকে প্রায় ৩৪৯ কোটি টাকা গায়েবের অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব টাকা তার বোন মেহজাবিনের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছেন সোহেল রানা।

৩১শে আগস্ট ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলার পর সোহেল রানা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ১০ই অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার কথা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, গ্রেপ্তার এড়াতেই সোহেল রানা পালানোর চেষ্টা করেন।

বিএনপির জমানায় নানা অনিয়মের কারণে চাকরি হারান। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আবার চাকরি ফেরত পান। ভারতে মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সোহেল রানাকে ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা। যদিও পুলিশ প্রধান ড. বেনজীর আহমেদ রোববার জানিয়েছিলেন, বন্দি বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে তাকে ফিরিয়ে আনা হবে।

XS
SM
MD
LG