অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য কাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ঝাঁক শিক্ষার্থী


ছিন্নমূল ও দুঃস্থ শিশুদের নিয়ে কাজ করছে রাজধানীর ঢাকার বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের সুযোগ সুবিধার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে নানা রকম কর্মসূচি রয়েছে তাদের। সংগঠনটির নাম দেয়া হয়েছে `স্কুল অব হিউম্যানিটি’।

২০১৭ সালের রমজান মাসে ১২০ জন শিশুকে নিয়ে একসাথে ঈদ উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে পথ চলা শুরু করে স্কুল অব হিউম্যানিটি। শুরুতে শীত বস্ত্র বিতরণ, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা ছাড়া নানারকম কাজ করছে তরুনদের এই সংগঠনটি। স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফখরুল মজুমদারের তার স্বপ্নের পথচলা নিয়ে ভয়েস অব আমেরিকাকে বললেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনের সাথে সে কাজ করে। তবে কোন সংগঠনেরই চুড়ান্ত কোন লক্ষ্য খুঁজে সংগঠনটির মাধ্যমে তারা ৪ থেকে ১৩ বছর পর্যন্ত শিশুদের সাথে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিয়ে কাজ করেন।

এ প্রতিষ্ঠানে আপাতত ২০ জন শিক্ষকের মাধ্যমে মোট ১৬০ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। শিক্ষকদের বেশিরভাগই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী, গৃহিনী ও চাকুরীজীবি। তারা স্বেচ্ছায় বিনা বেতনে এ কাজ করে। ফখরুল জানায়, এখানকার বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই মানবিকভাবে বিধ্বস্থ। তাই প্রথমেই মানষিক বিপর্যস্ততা কাটাতে পাশাপাশি তাদের মেধা বিকাশের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের ১০ জন শিক্ষার্থী কাজ করে যাচ্ছে। মাসে অন্তত: ১ দিন ডাক্তারদের ১টি টিম দিয়ে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা ও ঔষধ সররবরাহ করা হচ্ছে। ক্লাসের সময় হালকা নাস্তার পাশাপাশি বছরের বিশেষ বিশেষ দিনে বিশেষ অনুষ্ঠান করে ঐ দিনের মাহাত্ম তুলে ধরা হয়। একই সাথে ঐ দিনে তাদের জন্য ভাল খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।

প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় আর্থিক ব্যয় সম্পর্কে ফখরুল ভয়েস অব আমেরিকাকে জানান, ফেসবুকে ‘২ টাকার প্রজেক্ট’ নামে একটা আইডি খোলা আছে এবং সেখানে বিকাশ নম্বর দেয়া আছে। এ প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার জন্য প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। যা ফেসবুকের এই আইডির মাধ্যমেই আসে। যার বেশিরভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই দিয়ে থাকে বলেও জানান তিনি। তিনি জানান, প্রতি মাসে এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েই চলছে।

সুবিধা বঞ্চিত এসব ছেলে মেয়েদের নিয়ে তার ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে বলেন, তার লক্ষ্য হলো, সারা দেশে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসা। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি প্রথমত তাদের মধ্যে মানবিক গুনাবলীর সঞ্চার করা ও দ্বিতীয়ত কারিগরী শিক্ষা দিয়ে কোন না কোন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার জন্য তারা কাজ করে যাচ্ছে।

স্কুল অব হিউম্যানিটির পঞ্চম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার জানায়, এখান থেকে লেখাপড়া করে আমি শিক্ষত হতে চাই। লেখাপড়া শেষ করে আমি এরকম একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে চাই। যাতে করে আমার মত সুবিধা বঞ্চিতদের আমি লেখাপড়া শেখাতে পারবো। এখান থেকে লেখাপড়া শিখে তুমি কি করতে চাও বা তোমার কি লাভ হবে?

বর্তমানে ঢাকা ও ঢাকার বাহিরে তিনটি স্কুলের কার্যক্রম চলছে। স্কুলের উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন হলো, সকল শিশুর জন্য শিক্ষা বান্ধব সমাজ গড়ে তোলা।

শরীফ মুজিব, ঢাকা।

XS
SM
MD
LG