বাংলাদেশের বিরোধী নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এক বছর ধরে জেলে। এক দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে আদালত তাকে দ- দিয়েছে। নিম্ন আদালতে ৫ বছর সাজা হয়। পরে উচ্চ আদালতে সাজা বেড়ে ১০ বছর হয়ে যায়। সরকার বলছে এতে তাদের কোন হাত নেই। বিএনপি বলেছে একটি সাজানো মামলায় তাকে জেলে রাখা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মামলায় কোন অবস্থান না নিয়ে বলেছে, সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ২০০৮ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব মামলা প্রত্যাহার করা হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধীদলীয় সদস্যদের রাজনৈতিক উদ্দেশে গ্রেপ্তার একটি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এই নির্বাচনে শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বারের মত ক্ষমতায় আসেন।
সরকারি ফলাফল থেকে দেখা যায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে সব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে তার মধ্যে শতকরা ৯৫ ভাগেরও বেশি আসনে জয়ী হয়েছে শাসক দল। সংস্থাটির মতে, নির্বাচনের আগে সরকার পর্যায়ক্রমে বিরোধী রাজনীতিক ও তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করেছে। তিন লাখেরও বেশি ফৌজদারি মামলা দিয়েছে। ৮ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনেক মামলার অভিযোগ ভিত্তিহীন। যা কিনা ভৌতিক মামলা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বড় দুই দলের নেতাকর্মীরা সহিংসতায় যুক্ত ছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ পক্ষপাতহীনভাবে তাতে সাড়া দেয়নি। একতরফাভাবে বিরোধী দলের সদসদের গ্রেপ্তার করেছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক পরিচালক ব্রাড এডামস এর পর্যবেক্ষণ হচ্ছে নির্বাচনী অনিয়মের এন্তার অভিযোগ সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ তা আমলে নেয়নি। বরং উল্টো নির্বাচনে জালিয়াতির রিপোর্টিং এর জন্য সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করেছে। গুরুতর অভিযোগগুলোকে দ্রুততার সঙ্গে সরকার ও নির্বাচন কমিশন প্রত্যাখ্যান করেছে। বলেছে, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে।
খালেদা জিয়া কি সহসা মুক্তি পাবেন? জিজ্ঞেস করেছিলাম খালেদার আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে। তিনি বললেন, আইনী প্রক্রিয়ায় তো এর সম্ভাবনা আপাতত দেখছি না। কারণ আরো ৬টি মামলায় খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে ৩৬টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ২টি মামলার রায় হয়েছে। একাধিক মামলায় চার্জ গঠন করা হয়েছে। ঢাকা থেকে মতিউর রহমান চৌধুরী