অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

আইন পাসের পরও অবাধ নির্বাচন নিয়ে সংশয়, বিতর্ক


স্বাধীনতার ৫০ বছর পর নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন পাস হয়েছে বাংলাদেশ সংসদে। কিন্তু এ নিয়ে বিতর্ক থামছে না। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা। নির্বাচন কমিশন নিয়োগে বিতর্কের অবসান হবে এমন কোনো ইঙ্গিতও মিলছে না। যদিও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, "বাংলাদেশের ইতিহাসে গণমানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন গঠন আইন এক অনন্য মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।" শুক্রবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন নিয়ে বিএনপির সমালোচনাও নাকচ করে দেন ওবায়দুল কাদের।

বাংলাদেশের সংবিধানে নির্বাচন কমিশন নিয়োগে আইনের কথা বলা আছে। আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে বৃহস্পতিবার সংসদে এ আইন পাস হয়। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকার অত্যন্ত তড়িঘড়ি করে এ আইন পাস করেছে। এটি প্রহসন মাত্র। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে জানিয়েছেন, এ আইন নিয়ে আগেই প্রস্তুতি ছিল সরকারের। তিনি বলেন, "সরকার অনেকদিন থেকেই এটি প্রস্তুত করে রেখেছিল। এই বিল পাসের মাধ্যমে জনগণের ভোট সংরক্ষিত হলো। গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হলো।"

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডি সভাপতি আ স ম রব শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেন, "নির্বাচন কমিশন আইন ক্ষমতায় থেকে ক্ষমতা ধরে রাখার সরকারের নতুন একটা কৌশল মাত্র। আইন প্রণয়ন করলেই ভোটাধিকার সংরিক্ষত থাকে না, গত কয়েক বছরে তা বহুবার প্রমাণিত হয়েছে।"

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, "আইনটি নিয়ে অনেক প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে।" নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের জন্য সংসদে প্রস্তাব দেন তিনি। পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থা না আসা পর্যন্ত আইন করে কিছু হবে না বলে দাবি করেন জাতীয় পার্টির ফিরোজ রশিদ। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিরোধিতা করেন তিনি।

নাগরিক সমাজের অনেক প্রতিনিধিও এ আইনটির সমালোচনা করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেছেন, "কথিত নির্বাচন আইনকে সরকারি দলের পক্ষে নির্বাচনী ফলাফল নিশ্চিতকরণ আইন বলা যেতে পারে। একক কর্তৃত্বেই এসব কথিত আইন তৈরি হচ্ছে যা মুক্তিযুদ্ধের গণতান্ত্রিক চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।"

সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, "অনুসন্ধান কমিটির যোগ্য ব্যক্তিদের অনুসন্ধানের কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন কমিশন আইন নামে যা হচ্ছে তা নিতান্তই আনুষ্ঠানিকতা, সবকিছু হবে প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ী।"

XS
SM
MD
LG