বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন যে তিনি জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকির নির্বাচন-সংক্রান্ত মন্তব্য নিয়ে উদ্বিগ্ন নন। তার সরলতার সুযোগে দুষ্ট লোকেরা সুযোগ নিতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি। রবিবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে, অ্যাসোসিয়েশন অফ সার্জনস ফর স্লিপ অ্যাপনিয়া, বাংলাদেশ আয়োজিত আন্তর্জাতিক কর্মশালায় যোগ দেন তিনি। পরে এক প্রশ্নের জবাবে আবদুল মোমেন এ কথা বলেন।
আব্দুল মোমেন বলেন, “তিনি (নাওকি) একজন সরল মানুষ, ভালো মানুষ। তিনি বাংলাদেশের একজন ভালো বন্ধু। আমরা তার মন্তব্য নিয়ে উদ্বিগ্ন নই।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পিত জাপান সফর স্থগিত করা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, “জাপান সরকারের মধ্যে অস্থিতিশীলতা সহ বেশ কিছু বিষয় বিবেচনা করে বাংলাদেশ সফর স্থগিত করেছে।” ড. মোমেন বলেন, “জাপান মন্ত্রিসভার তিন প্রভাবশালী সদস্য সম্প্রতি পদত্যাগ করেছেন এবং তারা শুনেছেন যে প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাকে নিয়ে জাপানের সংসদে কিছু প্রস্তাব আসবে।”
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “জাপান আমাদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত… তবে তিনি (জাপানি প্রধানমন্ত্রী) খুব ব্যস্ত (অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে)।” তিনি আরও বলেন যে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত বিধিনিষেধের কারণে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন নীতি, এই সিদ্ধান্তের পেছনে আরেকটি কারণ।
একটি বড় ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়ে তুলে ধরার জন্য নির্ধারিত ছিল। পরে সিদ্ধন্ত হয়, বাংলাদেশ মাত্র ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল সফরের সুযোগ পাবে। এ প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, “এটি ছিল দুই দিনের সফর, কিন্তু প্রতিনিধি দলের অধিকাংশ সদস্য কোয়ারেন্টাইনের কারণে হোটেলে আটকে থাকবেন, এর কোনও মানে হয় না।” তিনি জানান যে বাংলাদেশ দুই বছরেরও বেশি সময় আগে আমন্ত্রণ পেয়েছিল, কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সফরটি বাস্তবায়িত হতে পারেনি।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাপান সফরে গেল, জাপানি পক্ষ আবারও সফর চূড়ান্ত করার ওপর জোর দেয়। ড. মোমেন বলেন, “আমরা এবার জাপানে যেতে চেয়েছিলাম। তারা আমাদের বারবার অনুরোধ করেছে। এটি চূড়ান্ত করা হয়েছিল। কিন্তু সব বিষয় বিবেচনা করে আমরা তা স্থগিত করেছি।”
আব্দুল মোমেন বলেন, “জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের গভীর সম্পর্ক থাকায় প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই জাপানে যাবেন।”
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছেন, তারা এই সফরের জন্য কাজ চালিয়ে যাবেন, কারণ এটি দুই দেশের জন্য লাভজনক। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে এই সফর বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অংশীদারিত্বকে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করবে।