বিএনপি নতুন নির্বাচন দাবী করেছে
জনগণ ৭ জানুয়ারির নির্বাচন ‘প্রত্যাখ্যান করেছে’ বলে দাবি করেছে বিএনপি। সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দলটির পক্ষ থেকে সোমবার আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
এতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডঃ আব্দুল মঈন খান বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, নতুন করে নির্বাচন দিতে হবে।
‘’সাত জানুয়ারির নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে জনগণ বিএনপির আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছে,’’ তিনি বলেন।
‘’জনগণের ভোটে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।‘’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এবং বেগম সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।
খালিদ হোসেন, ঢাকা থেকে
সুনামগঞ্জে জয়া সেনগুপ্ত বিজয়ী
সুনামগঞ্জ-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী রঞ্জিত চন্দ্র সরকার ১ লাখ ৯৯৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন কেটলী প্রতীকে পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৯৪১ ভোট।
সুনামগঞ্জ -২ আসনে কাঁচি প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়া সেনগুপ্ত। তিনি পেয়েছেন ৬৭ হাজার ৭৭৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৫৮ হাজার ৬৭২ ভোট।
সুনামগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ১ লাখ ২৬ হাজার ৯৯৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট শাহীনুর পাশা চৌধুরী পেয়েছেন ৪ হাজার ভোট।
সুনামগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিক ৯০ হাজার ৫৯০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ পেয়েছেন ৩১ হাজার ৭২১ ভোট।
সুনামগঞ্জ-৫ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মুহিবুর রহমান মানিক ১ লাখ ১৯ হাজার ৪০৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শামিম আহমদ চৌধুরী ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ৯১ হাজার ৮৮৮টি ভোট।
সিলেটে মোমেন জয়ী, শমসের মবিন পরাজিত
সিলেটের যে দুটি আসনে অঘটন ঘটতে পারে বলে অনেক জল্পনা-কল্পনা হয়েছে, তার একটি বাস্তবে রূপ নিয়েছে। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা হুছাম উদ্দিন চৌধুরীর কাছে পরাজিত হয়েছেন।
তবে প্রাক্তন মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ তাঁর আসনে জয়ী হয়েছেন। সেখানে নবগঠিত দল তৃনমূল বিএনপির চেয়ারপার্সন শমসের মবিন চৌধুরীর সম্ভাব্য জয় নিয়ে অনেক জল্পনা হয়েছে, কিন্তু তিনি আসেন তৃতীয় স্থানে।
সিলেটের ফলাফলঃ
সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৪৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মাওলানা ফয়জুল হক মিনার প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ১৯৩ ভোট।
সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরী নৌকা প্রতীকে ৭৮ হাজার ৩৮৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান (ট্রাক) পেয়েছেন ১৬ হাজার ৬৬১ ভোট।
সিলেট-৩ আসনে আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব ৭৯ হাজার ৬৭১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন বিএমএর কেন্দ্রীয় মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল (ট্রাক) পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৮৩৬ ভোট।
সিলেট-৪ আসনে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ নৌকা প্রতীকে ২ লাখ ৭ হাজার ৯৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল বিএনপির আবুল হোসেন (সোনালী আঁশ) পেয়েছেন ৪ হাজার ১১ ভোট।
সিলেট-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী, মাওলানা হুছাম উদ্দিন চৌধুরী কেটলি প্রতীকে ৪৭ হাজার ১৫৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি মাসুক উদ্দিন আহমদ নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৩২ হাজার ৯৭৩ ভোট।
সিলেট-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরুল ইসলাম নাহিদ ৫৭ হাজার ৭৭৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন ঈগল প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৪৮৮ ভোট। তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ও দলটির চেয়ারপার্সন শমসের মবিন চৌধুরী (সোনালী আঁশ) ১০ হাজার ৯৩৬ ভোট।
সূত্রঃ নির্বাচন কমিশন
২ ট্রান্সজেন্ডার প্রার্থীর কেউ জিততে পারেননি
৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ট্রান্সজেন্ডার প্রার্থীরা অংশ নিলেও দুজনের কেউ জিততে পারেননি।
রংপুর-৩ আসনের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রান্সজেন্ডার আনোয়ারা ইসলাম রানী।
আর গাজীপুর-৫ আসনের প্রথমবারের বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির দলীয় মনোনয়ন পেয়ে আলোচনায় ছিলেন ট্রান্সজেন্ডার প্রার্থী উর্মি।
বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, রংপুর-৩ আসনে ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে জিএম কাদের লাঙ্গল মার্কা নিয়ে ৮১ হাজার ৮৬১ ভোটে জয়ী হয়েছেন।
আর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনোয়ারা ইসলাম রানী ঈগল মার্কা নিয়েছেন পেয়েছেন ২৩ হাজার ৩২৬ ভোট।
নির্বাচনের পরাজয়ের পরে রানী ভয়েস অফ আমেরিকাকে তাৎক্ষনিক এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, "আমি এই ফলাফল মনে নিয়েছি। এই নিয়ে আমার কোনও আপত্তি নেই। রংপুরের মানুষ যে আমাকে এতোটা ভালোবাসা দিয়েছে, তাতে আমি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি।"
আর গাজীপুর- ৫ আসনে ৮ জন প্রার্থী মধ্যে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারউজ্জামান ৬১ হাজার ৬৯৭ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
তার প্রধান নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মেহের আফরোজ চুমকি পেয়েছেন ৫০ হাজার ৬৯৬ ভোট।
তবে, এই আসনের ট্রান্সজেন্ডার প্রার্থী উর্মি কত ভোট পেয়েছেন তা এখনও জানা যায়নি।
আদিত্য রিমন