হরতাল আর বর্জনের ডাকের মধ্যে ভোট গ্রহণ
হরতাল আর বর্জনের ডাকের মধ্যে ভোট গ্রহণ
বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ স্থানীয় সময় সকাল ৮ টায় শুরু হতে যাচ্ছে। সংসদের ৩০০ আসনে সরাসরি নির্বাচনের জন্য ১,৯৭০ জন প্রার্থী লড়াই করছেন।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এবারে ১১ কোটি ৬০ লক্ষ লোক ভোট দিতে পারবেন, যাদের মধ্যে এক কোটি ৫৪ লক্ষ ভোটার প্রথম বারের মতো ভোটে দেবেন। সারা দেশে ৪২,১৪৮টি ভোট কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে।
এবারের নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ কতটুকু থাকবে সেটা দিনের শেষে বোঝা যাবে। তবে বেশ কয়েকটি ছোট-বড় দল নির্বাচন বর্জন করছে, এবং পাবলিককে ভোট না দেবার জন্য আহবান জানিয়েছে। তারা সারা দেশে দিন-ব্যাপী হরতালের ডাকও দিয়েছে।
বর্জনকারি দলগুলোর অন্যতম হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপি, যারা বিগত ১১টি নির্বাচনের চারটিতে সরবোচ্চ আসনে জয়ী হয়েছে, আর তিনটিতে দ্বিতীয় সরবোচ্চ আসন লাভ করেছে।
নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনকৃত ৪৪টি দলের মধ্যে ২৮টি এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।
ভোট দিয়েছেন শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ৮টায় ঢাকার সিটি কলেজ কেন্দ্রে ভোটে দিয়েছেন। ভোট কেন্দ্রে তাঁর সাথে ছিলেন কন্যা সায়েমা ওয়াজেদ, বোন শেখ রেহানা আর বোনের পুত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।
আওয়ামী লীগ সভাপতি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-৩ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে তিনি ধানমন্ডি এলাকার ঢাকা-১০ আসনের ভোটার।
এই আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ। দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভোট কেন্দ্রে আসার আগে সকাল সাতটা ২৯ মিনিটের দিকে সিটি কলেজ কেন্দ্রে আসেন ফেরদৌস। এছাড়া আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মীও এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভোট দিতে আসাকে কেন্দ্র করে ভোট কেন্দ্র ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। প্রধানমন্ত্রী ভোট দিয়ে চলে যাওয়ার পর এ ভোট কেন্দ্রে সর্ব সাধারণের ভোট গ্রহন শুরু হয়।
সহিংসতার আশঙ্কা কম, বললেন নির্বাচন কমিশনার রহমান
নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান ঢাকা সিটি কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেয়ার পর সাংবাদিকদের বলেন, সব জায়গায় সময় মতো ভোটে গ্রহণ শুরু হয়েছে, এবং সহিংসতার তেমন আশংকা নেই।
তিনি জানান, ৯৩ শতাংশ কেন্দ্র ব্যালট পেপার সকাল ৮ টার মধ্যে পেয়ে গেছে। বাকি ৭ শতাংশ গতকাল পাঠানো হয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, 'বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে'
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ৮ টায় ঢাকা সিটি কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেবার পর, উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, '' নির্বাচনটা আমরা যে সুষ্ঠুভাবে করতে পারছি, এজন্য আমি আমার দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।''
তিনি আরও বলেন, ''অনেক বাঁধা ছিল, বিপত্তি ছিল, কিন্তু দেশের মানুষ তাদের ভোটের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়েছে। ভোট দেয়ার সেই পরিবেশটা আমরা তৈরি করতে পেরেছি।''
শেখ হাসিনা বিএনপি এবং জামায়াতের বিরুদ্ধে ''নানাভাবে নৈরাজ্য সৃষ্টি'' করার অভিযোগ তোলেন। ''তারা দেশের মানুষের কল্যাণ চায় না, গনতান্ত্রিক ধারা চায় না বলেই সন্ত্রাস নৈরাজ্য করছে,'' তিনি বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা হরতাল করছে, যারা ভোটে বাধা দিচ্ছে, তারাও বাংলাদেশের নাগরিক। আমি চাইনা আমার দেশের নাগরিকের উপর কোন নিষেধাজ্ঞা আসুক, বিরোধী দল হোক আর যেই হোক।
তিনি বলেন, অনেক সংগ্রাম করে মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হয়েছে। জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দিবে- এটাই বড় কথা। আর বিএনপি ভোটের পক্ষে থাকার কথা নয় তাদের উৎত্থান সন্ত্রাসের মাধ্যমে।
এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন বলেন, নিজ ঘরে ক্ষমতার জন্য যারা সন্ত্রাস করে তারা জনগণের রাজনীতি করে না। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে গনতন্ত্র ও স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে যা যা করনীয় তা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। জনগণ আওয়ামী লীগের পাশে আছে।