চূড়ান্ত ফলাফলে ২৯৮টি আসনে আওয়ামী লীগের ২২২
নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮ আসনের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী ২৯৮ আসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছে ২২২টি আসন।
বিগত সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি পেয়েছে মাত্র ১১টি আসন।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদ ১টি এবং বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ১টি আসনে জয়লাভ করেছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে নির্বাচিত হয়েছেন।
এর বাইরে ৩০০ আসনের বাকি ২টি আসনের মধ্যে নওগাঁ-২ আসনে আগে থেকে নির্বাচন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত ছিল। অপর দিকে ময়মনসিংহ-৩ আসনে নির্বাচন হলেও ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ২৯৯টি আসনে অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ২৯৮টি আসনের চুড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ময়মনসিংহ-৩ আসনের একটি কেন্দ্রে বড় ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। ফলে কেন্দ্রটির ফলাফল বাতিল করা হয়। কিন্তু দুই প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান কম হওয়ায় পুরো আসনটির ফলাফল স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে সারাদেশে অনুষ্ঠিত ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২৯৮টি আসনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে।
গোলাম সামদানী, ঢাকা থেকে।
নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ভরাডুবি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জাপা) বড় ধরনের ভরাডুবি হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির ছিল ২৩টি আসন। কিন্তু এবার পাচ্ছে তার অর্ধেকের চেয়েও কম।
রবিবারের (৭ জানুয়ারী) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ২৬টি আসনে সমঝোতা করে মাত্র ১১টি আসনে তাদের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে আগামী সংসদে প্রধান বিরোধী দল হওয়ার বিষয়টিও অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
শুধু তাই নয়, দলটি প্রতিষ্ঠার পর গত ৪০ বছরে কোন সংসদ নির্বাচনে এতো কম আসন পায়নি জাতীয় পার্টি। এর আগে ২০০১ সালে অষ্টম সংসদ নির্বাচনে দলটি ১৪টি আসন পেয়েছিলো। ফলে দ্বাদশ সংসদ আসনের আগে দলটির সর্বনিম্ন আসন ছিলো ১৪।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সমঝোতা করে ২৬টি আসনে জাপা প্রার্থীদের যারা বিজয়ী হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন— রংপুর-৩ আসনে জাপা চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের), ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, কুড়িগ্রাম-১ আসনে এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, সাতক্ষীরা-২ আসনে মো. আশরাজুজ্জামান আশু, পটুয়াখালী-১ আসনে সাবেক মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, বরিশাল-৩ আসনে গোলাম কিবরিয়া টিপু।
এছাড়াও জাতীয় পার্টির নির্বাচিত প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে পার্টির বর্তমান মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে এ কে এম সেলিম ওসমান, ফেনী-৩ আসনে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৫ আসনে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও বগুড়া-২ আসনে শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ।
গোলাম সামদানি, ঢাকা থেকে।
বিএনপি মঙ্গলবার থেকে দুদিনের গণসংযোগ ঘোষণা করেছে
বিরোধী দল বিএনপি আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন দাবী করেছে।
‘’এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন দিতে হবে, যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারবে,’’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সোমবার (৮ জানুয়ারী) ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবির পক্ষে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে আগামীকাল মঙ্গলবার ও বুধবার দুদিনের গণসংযোগ কর্মসূচি ঘোষণা করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
মঈন খান বলেন, ‘’দেশের জনগণ ৭ জানুয়ারির নির্বাচন একচেটিয়াভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।‘’
‘’আওয়ামী লীগ ডামি নির্বাচন করেছে, ডামি প্রার্থী দিয়েছে, ডামি পর্যবেক্ষক দিয়েছে, তবু ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে নিতে পারেনি। সরকারের প্রতি যদি মানুষের আস্থা থাকত মানুষ নিজেই ভোট দিতে আসতো,’’ খান বলেন।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ডকে ‘’নাটক’’ বর্ণনা করে মঈন খান বলেন নির্বাচন ‘’ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে।‘’
‘’জনগণ ডামি নির্বাচন বর্জন করে প্রমাণ করেছে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ভুয়া। নির্বাচন কমিশন দুই একটা কেন্দ্র বন্ধ করে প্রমাণ করতে চেয়েছে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে। এসব নাটক জনগণ বুঝে গেছে,’’ তিনি বলেন।
তিনি বলেন জনগণ সরকারের পরিবর্তন চায়, এবং বিএনপি জনগণের কাছে জবাবদিহি মূলক সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ন আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
খালিদ হোসেন, ঢাকা থেকে।
প্রধানমন্ত্রীকে অভিন্দন জানিয়েছে ভারত ও পাকিস্তান সহ কয়েকটি দেশ
জাতীয় নির্বাচনের পরের দিন সোমবার সকাল থেকে ভারত এবং পাকিস্তান সহ বাংলাদেশে নিযুক্ত বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্টদূত গণভবনে আওয়ামী লীগ সভপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস রানা ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, সোমবার সকাল থেকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারত, রাশিয়া, চীন, ভূটান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, পাকিস্তান, ব্রাজিল এবং মরক্কোর রাষ্ট্রদূতগণ আলাদা আলাদা ভাবে স্ব স্ব দেশের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এম এম ইমরুল কায়েস আরো বলেন, এসময় তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার দৃঢ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁদেরকে ধন্যবাদ জানান এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় সহযোগিতা কামনা করেন।
হাসিবুল হাসান, ঢাকা থেকে।