অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

দুবাইয়ের আল-হামরিয়া বন্দরে নোঙর করেছে এম ভি আব্দুল্লাহ


এমভি আব্দুল্লাহ দুবাইয়ের আল-হামরিয়া বন্দরে পৌঁছেছে। ২১ এপ্রিল, ২০২৪।
এমভি আব্দুল্লাহ দুবাইয়ের আল-হামরিয়া বন্দরে পৌঁছেছে। ২১ এপ্রিল, ২০২৪।

বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ, সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হওয়ারর পর, নিরাপদে দুবাইয়ের আল-হামরিয়া বন্দরে পৌঁছেছে। বাংলাদেশ সময় রবিবার (২১ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টায় বন্দরের বহির্নোঙরে জাহাজটি নোঙর করে।

গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জাহাজের মালিক পক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম। এদিকে, জাহাজ চলাচল পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা মেরিন ট্রাফিকের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, এমভি আব্দুল্লাহ আল-হামরিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থান করছে।

কেএসআরএম সূত্র জানায়, কয়লা খালাসের জন্য রাতেই জাহাজটিকে জেটিতে নেয়ার কথা রয়েছে। তা না হলে, সোমবার (২২ এপ্রিল) জাহাজটি জেটিতে ভিড়বে।

এমভি আবদুল্লাহর ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদ জানান, জাহাজের ২৩ নাবিকের সবাই সুস্থ আছেন। দুবাই পৌঁছানোর পর নাবিকদের দুজন ফ্লাইটে বাংলাদেশে ফিরবেন। বাকি ২১ জন কয়লা খালাসের পর মে মাসের প্রথম সপ্তাহে জাহাজ নিয়ে দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রায় ৩৩ দিনের জিম্মিদশার পর, ১৩ মার্চ দিবাগত রাত ১২টা ৮ মিনিটে ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ মুক্ত হয়। এরপর জাহাজটি ১ হাজার ৪৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে থাকা আরব আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরের উদ্দেশে রওনা দেয়।

এই পথ পাড়ি দিয়ে আট দিনের মাথায় জাহাজটি আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরে পৌঁছায়। গত ১২ মার্চ মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে আরব আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরে যাওয়ার পথে এমভি আবদুল্লাহ জলদস্যুদের কবলে পড়ে।

কেএসআরএম যা জানিয়েছিলো

এর আগে, রবিবার (১৪ এপ্রিল) ভোর পৌনে ৪টায় জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম এর মিডিয়া অ্যাডভাইজর মিজানুল ইসলাম জানিয়েছিলেন যে তারা জানতে পেরেছেন এমভি আব্দুল্লাহ জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হয়েছে।

মিজানুল ইসলাম ওই দিন বলেন, “কিছুক্ষণ আগে আমরা এই সুসংবাদ পেয়েছি। ২৩ নাবিকসহ আমাদের জাহাজটি ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সকল নাবিক অক্ষত এবং সুস্থ আছেন, তাদের অক্ষত অবস্থায় আমরা ফেরত পাচ্ছি।”

জলদস্যুদের কত টাকা মুক্তিপণ দেয়া হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, “এই মুহূর্তে তা বলতে পারছি না। তবে তাদের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে জাহাজ ও নাবিকদের আমরা ফিরিয়ে আনতে পারছি।” তবে, সোমালিয়ার একটি সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, ৫০ লাখ ডলার দিয়ে ছাড়া পেয়েছে এমভি আব্দুল্লাহ।

প্রতিমন্ত্রী খালিদ

এমভি আব্দুল্লাহ’র মুক্তি প্রসঙ্গে বাংলাদেশের নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আন্তর্জাতিক চাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও এর ২৩ নাবিক মুক্ত হয়েছেন।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

রবিবার (১৪ এপ্রিল) রাজধানীর তার বাসভবনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি আরো বলেন যে জলদস্যুদের মুক্তিপণ দেয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য তার জানা নেই।

“টাকা-পয়সা কিংবা মুক্তিপণের সঙ্গে আমাদের কোনো যোগসূত্র নেই। টাকা দিয়ে জাহাজ ছাড়িয়ে আনা হয়েছে, এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। অনেকেই বিভিন্ন ধরনের ছবি দেখাচ্ছেন; এ সব ছবির কোনো সত্যতা নেই। ছবিগুলো কোথা থেকে আসছে, কিভাবে আসছে, তা আমরা জানি না; বললেন প্রতিমন্ত্রী খালেদ।

তিনি আরো বলেন, যা হয়েছে, ডিপার্টমেন্ট অফ শিপিং, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা, ইউরোপিয়ান নেভাল ফোর্স, ভারতীয় নৌবাহিনী, সোমালিয়ার পুলিশের সহযোগিতায় হয়েছে।

“আমি সোমালিয়া পোর্টল্যান্ড পুলিশকে ধন্যবাদ দিতে চাই, তারা সার্বক্ষণিকভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছে। আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সংস্থার যে উইংগুলো রয়েছে, তারা আমাদেরকে খুবই সহায়তা করেছে;” আরো বলেন বাংলাদেশের নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী।

মুক্তিপণের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা তাদের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করেছি দীর্ঘদিন। এখানে মুক্তিপণের কোনো বিষয় নেই। আমাদের আলাপ-আলোচনা এবং বিভিন্ন ধরনের চাপ এখানে কাজ করেছে।”

XS
SM
MD
LG