শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার শপথ নিলেন গোপালগঞ্জ জেলা আ.লীগ
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার শপথ নিয়েছেন গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকালে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধের বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দলটির নেতা-কর্মীরা এ শপথ নেন।
গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান ও সাধারণ সম্পাদক জি এম শাহাবুদ্দিন আজম সবাইকে শপথবাক্য পাঠ করান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুসফিকুর রহমান লিটন, দপ্তর সম্পাদক ইলিয়াস হক, প্রচার সম্পাদক নজরুল ইসলাম, উপ-প্রচার সম্পাদক শিমুল চৌধুরী, গোপালগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সিদ্দিক সিকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ খান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. গোলাম কবীর, সাধারণ সম্পাদক মো. আলিমুজ্জামান বিটু, যুবলীগের সভাপতি জাহেদ মাহামুদ বাপ্পি, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হাসান লিয়ন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আমির হামজাসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
আরও উপস্থিত ছিলেন- টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল, টুঙ্গিপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ফোরকান বিশ্বাস, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক বি এম মাহামুদ হকসহ আরও অনেকে।
উপস্থিতরা বঙ্গবন্ধুর সমাধির সামনে দাঁড়িয়ে শপথ নেন, ‘বর্তমানে দেশে যা ঘটছে বাংলার মানুষ তা দেখেছে। তাই গণ-আন্দলোনকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে স্বসম্মানে দেশে ফিরিয়ে আনব। জাতির পিতার কবর সামনে রেখে আবারও শপথ করছি যে, কেউ ঘরে ফিরে যাব না। আজ থেকে এই জাতির পিতার সমাধি, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মুক্তিযোদ্ধা ও সচেতন নাগরিক ও সর্বস্তরের মানুষ একত্রিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধি অক্ষত রাখব। তাই আমরা আজ থেকে এই কবরকে সামনে রেখে ব্যক্ত করছি- আমরা যতদিন পর্যন্ত শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে দেশে ফিরে না আসবেন, আমাদের এক বিন্দু রক্ত থাকতে এই সমাধি ছেড়ে আমরা কেউ যাব না।’
শেষে তারা সৃষ্টিকর্তার নামে শপথের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
(এই রিপোর্টের কিছু তথ্য ইউএনবি থেকে নেয়া হয়েছে।)
আইনশৃঙ্খলা ফেরানোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে: অধ্যাপক ড. ইউনূস
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিতে দেশে ফিরে নোবেলবিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার বিকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘"নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা সবচেয়ে বড় শত্রু।"
এদিন স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ১০ মিনিটে ড. ইউনূসকে বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট (ইকে-৫৮২) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিমানবন্দরে ড. ইউনূসকে স্বাগত জানান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান ও নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান।
এছাড়াও অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, ছাত্র প্রতিনিধিরা এবং ইউনূস সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক লামিয়া মোরশেদও বিমানবন্দরে ছিলেন।
ড. ইউনূস প্যারিসে অলিম্পিকের আয়োজনে অংশ নিয়েছিলেন। সেখান থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে ভবিষ্যৎ নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে থাকা বাংলাদেশের জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
শেখ হাসিনার পতনের পর সামরিক কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজের নেতা এবং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনার পর ড. ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন নেতা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন তাকে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।
সোমবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে তাদের ও অন্যান্য অংশীদারদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান ড. ইউনূস।
(এই রিপোর্টের কিছু তথ্য ইউএনবি থেকে নেয়া হয়েছে)
আমেরিকান নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস তাদের নাগরিকদের নিরাপদ থাকার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে। এক বিবৃতিতে দূতাবাস থেকে বলা হয়েছে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর রাতে ছয় ঘণ্টা সান্ধ্য আইন বলবত আছে। রাস্তায় পুলিশ বাহিনী অনুপস্থিত থাকায়, ঢাকা, তার সংলগ্ন এলাকা এবং গোটা বাংলাদেশে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ এবং হামলার মারাত্মক ঘটনা ঘটছে।
“বর্তমান অস্থির এবং অনিশ্চিত পরিস্থিতি, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভাব এবং আরও সহিংসতার সম্ভাবনা থাকায়, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের উচিত নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নেয়া। তাদের যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাবার কথাও গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা উচিত, যদি নিরাপদে সেটা করা যায়,” বিবৃতিতে বলা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার পরিবর্তনের সাথে আরও সহিংসতার সম্ভাবনা আছে। সমাবেশ আর নতুন বিক্ষোভ অনিশ্চিত এবং যেকোনো সময় শুরু হয়ে যেতে পারে।
“ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পরিকল্পনা পর্যালোচনা করুন; স্থানীয় ঘটনাবলী সহ আপনার আশে-পাশের পরিস্থিতি সম্পর্কে সজাগ থাকুন; এবং সর্বশেষ তথ্যর জন্য স্থানীয় খবর মনিটর করুন,” বিবৃতিতে বলা হয়।
“ঢাকার প্রধান বিমান বন্দর হজরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর খোলা আছে এবং ফ্লাইট আবার শুরু হয়েছে। আঞ্চলিক বিমানবন্দরগুলোও খোলা আছে। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক যারা চলে যেতে চান, তাদের অনলাইনে বা স্থানীয় টিকেট অফিস থেকে টিকেট কিনতে হবে।”
কিছু এয়ারলাইন্স অফিসের স্থানীয় নম্বর নিচে দেয়া হল:
১. ক্যাথে প্যাসিফিক: +৮৮০ ১৭৬৬৬ ৯৮১৭০, +৮৮০ 17666 98১৬৮
২. কাতার এয়ারলাইন্স: +৮৮০ ৯৬১০ ৮০০৮০০
৩. এমিরেটস: + ৮৮০ ৯৬০ ৯০০ ১১৩৩
৪. সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স: +৮৮০ ১৮৪১২ ৮৯১৭৩, +৮৮০ ২২২২২২ ৮৪৯৮২
৫. থাই এয়ারলাইন্স: +৮৮০ ২৮৯০১৮০৭, +৮৮০ ২২২২২৯০০২৩, +৮৮০২২২২২ ৯৬২২৫
৬. টার্কিশ এয়ারলাইন্স: +৮৮০ ৯৬১৪ ১১১৫৫৫
৭.সৌদি এয়ারলাইন্স: +৮৮০২৫৫০ ২৮০৭০
৮. ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স: +৮৮০১ ৭৭৭৭৭৭ ৮১০
৯. বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স: +৮৮০৯৬১৭ ১১১৮৮৮, +৮৮০২৮৯০ ১৬০০
১০. এয়ার ইন্ডিয়াঃ +৮৮০১৮৪৭ ২৯১৩৮৮
বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস শুধু সীমিত কার্যকলাপের জন্য খোলা থাকবে এবং পরিবারের সদস্য আর যাদের কাজ জরুরী নয়, তাদের চলে যেতে বলা হয়েছে।
“পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সকল নিয়ম মাফিক কন্সুলার সেবা বাতিল করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের স্টাফ বর্তমানে নিরাপদ আশ্রয়ে আছে। জরুরী যুক্তরাষ্ট্র নাগরিক সেবার জন্য দয়া করে এই ঠিকানায় যোগাযোগ করুন: DhakaACS@state.gov
বিবৃতিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের তালিকা দেয়া হয়:
- বড় জনসমাগম এবং বিক্ষোভ এড়িয়ে চলুন, প্রয়োজন হলে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিন।
- সব সময় আপনার আশে-পাশের পরিস্থিতি সম্পর্কে সজাগ থাকুন
- স্থানীয় খবর মনিটর করুন
- সজাগ থাকুন
- জরুরী যোগাযোগের জন্য আপনার চার্জ করা মোবাইল সব সময় সাথে রাখুন
- বাংলাদেশ থেকে চলে যাওয়া গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করুন, ফ্লাইট সম্পর্কে খোঁজ নিন
- প্রয়োজনীয় জিনিস মজুদ রাখুন
বিবৃতিতে সাহায্যের জন্য যোগাযোগের তালিকা দেয়া হয়েছে:
- যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস, ঢাকা, বাংলাদেশ - +৮৮ ০২ ৫৫৬৬ ২০০০
- DhakaACS@state.gov
- https://bd.usembassy.gov/
- স্টেট ডিপার্টমেন্ট – কন্সুলার অ্যাফেয়ার্স – ৮৮৮-৪০৭-৪৭৪৭ অথবা ২০২-৫০১-৪৪৪৪
- Smart Traveler Enrollment Program (STEP) এ যোগ দিয়ে নিরাপত্তা বিষয়ক আপডেট পাবেন।
- আমাদের ফেসবুক এবং এক্স, প্রাক্তন টুইটারে ফলো করুন।
বেনাপোল সীমান্তে বিজিবির নিরাপত্তা জোরদার
বেনাপোলে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম রোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
এছাড়া আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী-এমপি ও নেতা-কর্মীরা যাতে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবিকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার কথা বলা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে বেনাপোল দিয়ে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ভারতে যাওয়ার সময় সজীব হালদার নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করেছে বিজিবি। তিনি ঢাকার নবাবগঞ্জ বান্দুরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।
বিজিবি জানায়, যশোরের শার্শা ও বেনাপোল সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে যশোর ৪৯ ও খুলনা ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন। ইতোমধ্যে সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো ও বন্দর এলাকাসহ স্থল ও রেলপথে বাড়ানো হয়েছে বিজিবির নজরদারি। অবৈধপথে ভারতে যাওয়ার জন্য বেনাপোলের পুটখালী, গোগা, কায়বা, অগ্রভুলোট, রুদ্রপুর, দৌলতপুর, গাতিপাড়া, ঘিবা, সাদিপুর, বড় আঁচড়া, কাশিপুর ধাণ্যখোলা, রঘুনাথপুর, গোগা, শিকারপুর ও হরিশ্চন্দ্রপুর সীমান্ত ব্যবহার করা হয়।
বিজিবি আরও জানায়, দেশব্যাপী সহিংসতা ও শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করার পর দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সীমান্ত দিয়ে প্রবেশকারীদের রুখতে মঙ্গলবার ঢাকা সদর দপ্তর থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। ফলে সীমান্ত এলাকায় বিজিবিকে সতর্কবস্থায় রাখা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের ওপারে সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফও কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাহারুল ইসলাম বলেন, "দেশের এই পরিস্থিতিতে বেনাপোল দিয়ে যাত্রী যাতায়াত কমেছে। ভ্রমণ ভিসায় কড়াকড়ি ও মেডিকেল ভিসায় যাত্রী যাতায়াত করছে।"
যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, "বেনাপোলে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে কঠোর নজরদারি রাখা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী-এমপি ও নেতা-কর্মীরা যাতে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ না করতে পারে সেক্ষেত্রে প্রত্যেক বিওপি পোস্টে কঠোর নিরাপত্তা জোরদারসহ অতিরিক্ত বিজিবি মোতায়ন করা হয়েছে।"
(এই রিপোর্টের কিছু তথ্য ইউএনবি থেকে নেয়া হয়েছে)