মাকে দেখতে চাইলেও গোপনীয়তার স্বার্থে তা করছেন না সায়মা ওয়াজেদ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ বলেছেন, তিনি তার মাকে দেখতে চাইলেও তার (শেখ হাসিনা) গোপনীয়তার স্বার্থে তা করছেন না।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ এক বার্তায় তিনি বলেন, "যারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাদের জন্য: আমি মাকে দেখতে চাইলেও, তিনি কোথায় আছেন তা জানাজানি হোক তা কোনভাবেই চাই না।"
আগের দিন বুধবার সায়মা ওয়াজেদ আরেক বার্তায় এক্স-এ বলেছিলেন, "যে দেশকে আমি এত ভালোবাসি, আমার সেই দেশে এত প্রাণহানিতে আমার মন ভেঙে গেছে। এতটাই মন খারাপ যে আমি এই কঠিন সময়ে আমার মাকে দেখতে এবং জড়িয়ে ধরতে পারছি না।"
অরাজকতার বিষবাষ্প যারা ছড়াবে তাদের কঠোর হস্তে দমন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস অরাজকতার বিষবাষ্প যারা ছড়াবে তাদের কঠোর হস্তে দমন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) শপথ নেয়ার পর জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া তার প্রথম ভাষণে বলেন, "অরাজকতার বিষবাষ্প এখন যে-ই ছড়াবে বিজয়ী ছাত্র-জনতাসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পূর্ণ শক্তি তাকে ব্যর্থ করে দেবে।"
ভাষণে তিনি আরো বলেন, "...স্বাধীনতার এই মিলন মেলা থেকে বাদ যাবে না যারা আমাদের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও। সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী, বর্ডার গার্ড, পুলিশ, আনসার, গ্রাম প্রতিরক্ষা, কোস্টগার্ড কেউ বাদ যাবেনা।"
দেশের সকল মানুষকে আজ স্বাধীন, নির্ভয়, নিরুদ্বেগ থাকার নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য আমাদের ছাত্র শহীদরা প্রাণ দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট সরকার দেশের প্রত্যেকের সরকার। এখানে থাকবে সকলের আকাঙ্ক্ষা পূরণের অধিকার।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে শুভেচ্ছা জানালেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী
বাংলাদেশের নতুন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ এক বার্তায় তিনি লিখেছেন, "প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের এই নতুন দায়িত্ব গ্রহণকালে তাঁকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা। আমরা আশা করি, পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে এবং হিন্দু ও অন্যান্য সকল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য আমাদের উভয় দেশের জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"
ডঃ ইউনুসের অভিজ্ঞতা সরকারের সাফল্যে বড় ভূমিকা রাখবে, বলছেন বিশ্লেষক
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানের পর গ্রামীণ ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা ডঃ মুহাম্মাদ ইউনুসের নেতৃতে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে, তা নিয়ে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন বিদেশি বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন ডঃ ইউনুসের অভিজ্ঞতা নতুন সরকারের সাফল্যে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
“ইউনুস কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত না, কিন্তু তিনি অরাজনৈতিক কোন ব্যক্তি নন, তাঁর অনেক রাজনৈতিক দক্ষতা আছে” বলেছেন যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক বেসরকারি গবেষণা কেন্দ্র কাউন্সিল ফর ফরেন রিলেশন্স এর দক্ষিণ এশিয়া ফেলো, জশুয়া কুরলান্টজিক।
কুরলান্টজিক বলেন ইউনুস দীর্ঘদিন অলাভজনক বা এনজিও সেক্টরে কাজ করছেন যেখানে অর্থ জোগাড় করতে এবং বিভিন্ন দাতা গোষ্ঠী আর আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে দরকষাকষি করতে “অনেক রাজনৈতিক দক্ষতা প্রয়োজন।”
“তিনি আকাশ থেকে পরেন নি, তিনি বোকা নন,” কুরলান্টজিক ভিওএ-র দিওয়া সার্ভিসকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন।
কুরলান্টজিক বলেন গত সোমবার (৫ অগাস্ট) শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশত্যাগের পর কিছু পদক্ষেপ আশার সঞ্চার করেছে। তিনি বিশেষ করে উল্লেখ করেন সেনা বাহিনীর নমনীয় ভূমিকার কথা।
“অতীতে আমরা সেনা বাহিনীকে হস্তক্ষেপ করে ক্ষমতা দখল করতে দেখেছি, কিন্তু এবার তারা বাংলাদেশকে বেসামরিক শাসনের পথে নিয়ে গেছে,” কুরলান্টজিক বলেন। “মনে হচ্ছে, সেনাবাহিনী রাজনীতি থেকে বের হয়ে যেতে চায়।”
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে সেনা বাহিনী ডঃ ইউনুসকে তাঁর মত কাজ করতে দেবে। “ইউনুস নিজের মত কাজ করেন এবং তিনি সহজে চাপ মেনে নেবেন না।”
কুরলান্টজিক বলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনার আমলে গার্মেন্টস শিল্পের সম্প্রসারণ সহ অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে ঠিকই, কিন্ত তাঁর রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে অনেক সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে।
“রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, স্বজনপ্রীতি, ক্রমবর্ধমান নির্যাতন-এর ফলে অনেক বিদেশী বিনিয়োগের সম্ভাবনা নস্যাৎ হয়েছে, অনেক যুবক চাকরী না পেয়ে বিদেশী চলে গেছে।
“গণতন্ত্র ক্রমশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না করে দমনের নীতি গ্রহণ করা হচ্ছিল,” কুরলান্টজিক বলেন।