বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আবদুল মোমেনের ওয়াশিংটন সফর স্থির হয়েছে। আগামী ১০ই এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এর সঙ্গে ড. মোমেনের বৈঠকের কথা রয়েছে। সফরকালে ড. মোমেন সপ্তাহখানেক যুক্তরাষ্ট্রে থাকবেন।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কথা বলবেন। ৩০শে ডিসেম্বরের বিতর্কিত নির্বাচনের পর এটা হবে বাংলাদেশের কোন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তার যুক্তরাষ্ট্র সফর। নির্বাচনের পরপরই যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এতে জনমতের প্রতিফলন ঘটেনি। গেল সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার রিপোর্টেও বলা হয়েছে নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়নি। যদিও বাংলাদেশ সরকার এই রিপোর্টকে বাস্তবতা বিবর্জিত উল্লেখ করে প্রত্যাখ্যান করেছে। আনুষ্ঠানিকভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশ সরকারের তরফে একটি প্রতিবাদ নোট বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে পৌঁছেছে। নির্বাচন প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রতিবাদ নোটে বলা হয়, কোন নির্বাচনই ত্রুটি মুক্ত নয়। কোন বিষয়ে অভিযোগ থাকলে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন তা খতিয়ে দেখতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচন এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে আলোচনায় স্থান পাবে।
ড. মোমেনের যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে দ্বিপক্ষীয় সব বিষয়েই আলোচনায় স্থান পাবে। রোহিঙ্গা সংকটের আশু সমাধান চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে তারা বিশ্বসভায় জোরালো বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। আর্থিক সহায়তাও দিচ্ছে। মিয়ানমারকে বাধ্য করার জন্য নানামুখী চাপ অব্যাহত রেখেছে।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মূল বাজার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। শর্ত পূরণ হয়নি এই অভিযোগে জিএসপি সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকার কর্মকর্তারা অবশ্য কয়েক বছর থেকে বলে আসছেন, শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী কোন আইন নেই বাংলাদেশে। শ্রমিকদের ইউনিয়ন করার অধিকারও নিশ্চিত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এতে সন্তুষ্ট নয়। তাদের কথা, শ্রম পরিবেশ ও শ্রম অধিকার পুরোপুরি নিশ্চিত হয়নি। ২০১৩ সনের ২৭শে জুন বাংলাদেশী পণ্যের অবাধ বাজার সুবিধা স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের মোট বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশে বৈদেশিক বাণিজ্য রয়েছে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে এক চতুর্থাংশই যুক্তরাষ্ট্রের।