অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশ ও ভারতের করোনা পরিস্থিতি


বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। বিভিন্ন সুত্রে জানা যাচ্ছে, বেশ কিছু এলাকা রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছেনা যার ফলে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার বিনা মূল্যে করোনা পরীক্ষা

বন্ধ করে দিয়েছে। বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করলে ৫০০ টাকা এবং বুথে গিয়ে পরীক্ষা করালে দুশো টাকা মূল্য ধার্য করা হয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি এবং এই পরিস্থিতিতে করোনা পরীক্ষার ওপর মূল্য বসানো কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে ভয়েস অফ আমেরিকার সঙ্গে বলেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডাঃ এবিএম আবদুল্লাহ।

ডাঃ এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, এলাকা ভিত্তিক রেড জোন চিহ্নিত করার ফলে কিছুটা সুফল পাওয়া গেছে। সংক্রমণ হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে। তবে জনগণকে একটু দায়িত্বশীল হতে হবে।

সমন্বয়হীনতা বা প্রশাসনের দুর্বলতাই হোক তা কাটিয়ে উঠে অতি দ্রুত যেসব এলাকাতে সংক্রমণের সংখ্যা অনেক বেশী সে এলাকাগুলোকে লকডাউনের আওতায় আনা প্রয়োজন। তিনি বলেন, যদি এলাকা ভিত্তিক লকডাউন করা না হয় তা হলে সংখ্যা আরও বেশী বৃদ্ধি পাবে। এলাকা ভিত্তিক লকডাউন যেন শুধু কাগজে কলমে না হয় যাতে বাস্তবায়িত

হয় সে ব্যাপারে যত্নবান হওয়া উচিত।ঐ এলাকার জনগণকে যেন সম্পৃক্ত করা হয়

জনগণের মাধ্যমে নির্ধারিত এলাকায় প্রচার করা হয় এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি

যারা ছাত্র-শিক্ষক জনতা তাদের সম্পৃক্ত করা যায় এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রস্তুত

রাখা হয়।অনেক নিম্ন আয়ের, গরিব লোক আছে যারা এই করোনা সময়ে কোন কাজ করতে পারছেনা এবং তাদের ঘরে খাবার নেই। এই মানুষগুলোকে তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা করে দেয়া প্রয়োজন। নিত্তও প্রয়োজনীয় সামগ্রী তাদের যেন সরবরাহ করা হয়। তাহলেই লকডাউন সফল হবে। আর তা না হলে জীবন জীবিকার তাগিদে লোকজন বাইরে বের হবেই।

ডাঃ এবিএম আবদুল্লাহ করোনা পরীক্ষার ওপর মূল্য ধার্য করার বিষয়ে বলেন, অনেক প্রাইভেট হাসপাতালে এই করোনা পরীক্ষার মূল্য সরকার সারে তিন হাজার টাকা ধার্য করে দেবার পরেও তারা আরও বেশী টাকা নিচ্ছে। তাই সরকার চাইছে একটি টোকেন হিসেবে স্বল্প মূল্যে লোকজন যেন করোনা পরীক্ষা করাতে পারে। বাংলাদেশ সরকার করোনা পরীক্ষার যে মূল্য নির্ধারণ করেছে তাতে যুক্তি হল, অনেকে অপ্রয়োজনীয় কারণে, অযথা লম্বা লাইন করে পরীক্ষা করানোর জন্য। এতে ভোগান্তি বাড়ে। একজন ভাইরাসে আগে থেকে সংক্রমিত না হলেও লাইনে অন্যান্যদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকার ফলে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই এই মূল্য নির্ধারণের কারণে ঐ ভিড়টা একটু কমবে। সরকারী হাসপাতালে দুটো ব্যবস্থাই রাখা আছে। যারা পারবেন মূল্য পরিশোধ করতে এবং যারা পারবেন না তাদের আলাদা আলাদা বুথ করা হয়েছে। সেই একই ব্যবস্থা বাইরেও রাখা যেতে পারে বিশেষ করে এই দুর্যোগের সময়ে।

ওদিকে ভারতের পরিস্থিতিও খারাপ হচ্ছে। প্রতিদিন মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে সংক্রমিতের সংখ্যা। ভারতের পরিস্থিতি নিয়ে ভয়েস অফ আমেরিকার সঙ্গে কথা বলেন ডাঃ নারায়ণ ব্যানার্জি।

ডাঃ নারায়ণ ব্যানার্জি বলেন পশ্চিমা বিশ্বের তুলনায় ভারতে করনা মৃত্যু হার কম। তবে এটি ঠিক যে সংখ্যাগুলো প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে কলকাতা সরকার মেট্রো রেল চালু করা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন। তারা মেট্রো রেল চালু করলে কি দ্ধরনের স্বাস্থ্যবিধি নির্ধারণ করা প্রয়োজন তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনার মধ্যে রয়েছে। ডাঃ নারায়ণ ব্যানার্জি বলেন, মেট্রো রেল চালু করতে গেলে অনেক সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন কেননা লোকজন মেট্রোতে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে।ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে এ নিয়ে কথা চলছে। মেট্রোতে আসন সংখ্যার বেশী লোক যাতে না ওঠে সেদিকে নজর রাখতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য প্রয়োজন। একটি মেট্রোতে যদি স্বাভাবিক সময়ে পাঁচশো লোক যাতায়াত করে থাকে তা হলে এখন সেখানে দুশো লোক যেতে পারবে। কিন্তু বাকি যারা রয়ে যাবেন তারা অপেক্ষা করতে চাইবেন না। এবং সেটাই সমস্যা তৈরি করবে। বাস চলাচল শুরু করার পর আমরা এমন চিত্র দেখেছি।

please wait

No media source currently available

0:00 0:15:20 0:00


XS
SM
MD
LG