অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

২০০৮-এ আহমেদাবাদে ধারাবাহিক বোমা হামলার রায়: একসঙ্গে ৩৮ জনের ফাঁসি


ফাইল- সিরিজ বোমা হামলা চালানোর অভিযোগে আহমেদাবাদ ক্রাইম ব্রাঞ্চ কালো হুড পরা নয় ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। ১৬ আগস্ট ২০০৮
ফাইল- সিরিজ বোমা হামলা চালানোর অভিযোগে আহমেদাবাদ ক্রাইম ব্রাঞ্চ কালো হুড পরা নয় ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। ১৬ আগস্ট ২০০৮

আহমেদাবাদ বিস্ফোরণ মামলায় বিরল রায় দিল ভারতের বিশেষ আদালত। দোষী সাব্যস্ত হওয়া ৪৯ জনের মধ্যে ৩৮ জনকে একসঙ্গে ফাঁসির সাজা শোনালেন বিচারক। কয়েকদিন আগেই তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। এবার সাজা ঘোষণা হল। একসঙ্গে এতজনকে ফাঁসির সাজা ভারতে এই প্রথম। বাকি ১১ জন দোষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

২০০৮ সালের ২৬ জুলাই। একের পর এক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল আহমেদাবাদ। এক ঘণ্টা ১০ মিনিটের মধ্যে পরপর ২১টি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল জঙ্গিরা। ভয়াবহ এই হামলায় ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আহত হয়েছিলেন প্রায় ২৫০ জন।

এই ধারাবাহিক বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে জঙ্গি গোষ্ঠী হরকত-উল-জিহান্দ-আল-ইসলামি। তদন্তে জানা যায়, শুধু আহমেদাবাদ নয়, সুরাটেও ৪০টির বেশি বিস্ফোরণ ঘটানোর ছক ছিল জঙ্গিদের। কিন্তু প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে সেই ছক বানচাল হয়ে যায়। ধরা পড়ার পর সবরমতী জেলে মাটির নিচে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে পালানোর ছক কষে কয়েকজন অভিযুক্ত। যদিও সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

সেই সময় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদী এবং রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন অমিত শাহ। জঙ্গিদের তরফে দাবি করা হয়, ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার বদলা নিতেই নাকি এই হামলা চালানো হয়েছিল।

শুধু এই হামলাই নয়। এর পরে যখন আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন দু’টি সরকারি হাসপাতালের সামনেও বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা।

ভয়াবহ এই ঘটনার পরে ১৪ বছর পার হয়েছে। আদালতে একের পর এক শুনানি, সাক্ষ্য প্রমাণের পর, দীর্ঘ সওয়াল জবাবের শেষে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলো।

তদন্তে জানা গিয়েছিল, হামলায় ব্যবহৃত বিস্ফোরকগুলি তৈরি করেছিল ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের আজমগড় মডিউল। এর পেছনে ছিল রিয়াজ ও ইকবাল ভটকলের গ্রুপ। কর্নাটকের জিহাদি গ্রুপের হাতও ছিল এই হামলার পিছনে। একটি ভুয়ো রেজিস্ট্রেশনযুক্ত গাড়ি ও খবর কাগজে মোড়া আইইডি দেখেই এই ঘটনায় বরোদা যোগের সন্ধান পান তদন্তকারীরা, কারণ খবরের কাগজটি ছিল বরোদা থেকে প্রকাশিত। এরপর বরোদায় তদন্তে নেমে একাধিকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজমগড়, দিল্লী ও মুম্বাইতেও তল্লাশি চলে। বড়সর মডিউলের সন্ধান পান তদন্তকারীরা।

মোট ৭৭ জন অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়। সেই ৭৭ জনের মধ্যে ৪৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে গুজরাটের বিশেষ আদালত। বাকি ২৮ জনকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করা হয়। এই মামলারই শুক্রবার রায়দান করল বিশেষ আদালত।

XS
SM
MD
LG