২০০২ ভারতের গুজরাত রাজ্যের গোধরায় অযোধ্যা ফেরৎ করসেবকদের ট্রেনের মধ্যে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আট আসামিকে শুক্রবার জামিন দিল দেশের সুপ্রিম কোর্ট । তবে চারজনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, আসামিরা ইতিমধ্যে ১৭ বছর জেল খেটেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগও জোরালো মনে হয়নি শীর্ষ আদালতের।
তবে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ আট আসামির জামিন মঞ্জুর করার সময় কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়ে। গুজরাত সরকারের হয়ে মামলায় তিনি বলেন, ওই আসামিরা নির্মমভাবে মানুষকে হত্যা করেছে। আগুন থেকে যাত্রীরা যাতে নিজেদের রক্ষা করতে না পারে সে জন্য বাইরে থেকে ট্রেনের কামরার দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এরা জামিন পাওয়ার অযোগ্য। অন্যদিকে, প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের বক্তব্য, ১৭ বছর জেলে কাটানোর পর জামিন পাওয়াটা আসামির অধিকারের মধ্যে পড়ে। শর্তসাপেক্ষে অন্তবর্তীকালীন জামিন দেওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ওই হত্যাকাণ্ডে মোট ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সবরমতী এক্সপ্রেসের কামরার দরজা বন্ধ করে দিয়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ ওঠে এলাকার মুসলিম বাসিন্দাদের একাংশের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার জেরে গুজরাতের বিভিন্ন শহরে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। দাঙ্গায় মারা যায় এক হাজারের বেশি মানুষ।
গোধরার সেই হত্যাকাণ্ডের একটি মামলায় অভিযুক্ত ১২জনকে নিম্ন আদালত ফাঁসির সাজা দিলেও পরে হাই কোর্ট মৃত্যুদণ্ড খারিজ করে যাবজ্জীবন কারাবাসের দণ্ড দেয়। হাই কোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছে গুজরাত সরকার। তারা আসামিদের মৃত্যুদণ্ড চায়।
এদিকে, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওই ১২ আসামি সর্বোচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করেছিল। তাদের বক্তব্য, ইতিমধ্যে ১৭ বছর জেলে কেটেছে। কারাগারে তাদের আচরণ নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। শুক্রবার ১২ আসামির আটজনের আর্জি মঞ্জুর করে শীর্ষ আদালত।