অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সিডিসির রিপোর্টে বাংলাদেশ এখনো অতি উচ্চ ঝুঁকিতে 


বাংলাদেশে করোনার বিস্তার প্রতিরোধে দেয়া লক ডাউন শিথিল করার পর রাজধানী ঢাকায় যাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। ফাইল ফটো- রয়টার্স
বাংলাদেশে করোনার বিস্তার প্রতিরোধে দেয়া লক ডাউন শিথিল করার পর রাজধানী ঢাকায় যাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। ফাইল ফটো- রয়টার্স

করোনাভাইরাস সংক্রমণের দিক থেকে বাংলাদেশ এখনো অতি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। মার্কিন সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন(সিডিসি)-র সর্বশেষ রিপোর্টে এমনটাই বলা হয়েছে। সিডিসি সংক্রমণকে চার ভাগে ভাগ করেছে। এতে রয়েছে অতি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ, মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ। যেসব দেশে করোনার পরিস্থিতি ভালো নয় সেসব দেশকে অতি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলাদেশকে রাখা হয়েছে অতি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে।

বিশ্বের ৭০ টি দেশ এই তালিকায় রয়েছে। ৭ই সেপ্টেম্বর সিডিসি তাদের মূল্যায়ন তুলে ধরেছে। ভারত ও পাকিস্তানের অবস্থানের পরিবর্তন হয়েছে। এই দুটি দেশ এখন আর অতি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণতে নেই। হালকা ঝুঁকির দেশে নেমে এসেছে। সিডিসি রিপোর্ট অনুযায়ী আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, ফিলিপাইন উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রয়েছে।

কম ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় রয়েছে চীন, নিউজিল্যান্ড ও তাইওয়ান। রিপোর্টে মার্কিন নাগরিকদেরও অতি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, যদি একান্তই ভ্রমণ করতে হয় তাহলে অবশ্যই ভ্যাকসিন নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা দুই ডোজ ভ্যাকসিন নেয়ার পরও নিরাপদ নয়। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে ভাইরাসের সংক্রমণ এখন নিম্নমুখী।

সংক্রমণ এখন দশ-এর নিচে নেমে এসেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বাংলাদেশে ঝুঁকি অনেকটাই কমে গেছে। সংক্রমণ কমে যাওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে। স্বাভাবিক হয়ে গেছে সবকিছু। রবিবার থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু হয়ে গেছে। বিমান চলাচল এখনো স্বাভাবিক হয়নি।

সিডিসি বাংলাদেশকে অতি উচ্চ ঝুঁকিতে রাখলেও দেশটির নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। দুই ডোজ ভ্যাকসিন যারা দিয়েছেন এবং ভ্রমণের ৭২ ঘণ্টা আগে করোনার নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকলেই বাংলাদেশিরা সহজেই যুক্তরাষ্ট্র সফর করতে পারছেন।

যদিও বৃটেন নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। বাংলাদেশি কোনো নাগরিককে ১০ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বাংলাদেশের তরফে একাধিকবার বৃটিশ সরকারকে অনুরোধ জানালেও এখন পর্যন্ত দেশটি সাড়া দেয়নি। এ কারণে ৬ থেকে ৭ হাজার বাংলাদেশি বৃটিশ নাগরিক আটকা পড়েছেন।

এ সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন আজ সোমবার কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণেই বৃটেন বাংলাদেশকে লাল তালিকায় রেখেছে। কি সেই রাজনৈতিক কারণ তিনি অবশ্য তা খোলাসা করেননি।

তবে ওয়াকিবহাল কূটনীতিকরা ধারণা করছেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বৃটেন যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল তা নিয়েই দু'দেশের সম্পর্কে কিছুটা টানাপড়েন তৈরি হয়। বাংলাদেশ ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে বিদেশ মন্ত্রণালয়ে তলব করে অসন্তোষ প্রকাশ করে। সর্বশেষ দুই দেশের মধ্যকার কৌশলগত সংলাপে এর প্রতিফলন দেখা যায়। বৃটেন আবারো চারটি বিষয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করে।

এর মধ্যে রয়েছে- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রভাব, বিচার বহির্ভূত আটক, বিধিবহির্ভূত বিচার প্রক্রিয়া ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। একইসঙ্গে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, জবাবদিহিমূলক শাসন ব্যবস্থার উন্নয়নে নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ, মতপ্রকাশ ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ওপরও জোর দেয় বৃটেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আফগান নাগরিকদের বৃটেন প্রবেশে স্বাগত জানাচ্ছে অথচ তারা এক ডোজ টিকাও নেয়নি। এমনকি ইউরোপিয়ানদেরও তারা যেতে দিচ্ছে। ভারতীয়রাও সেদেশে যাচ্ছে। দুনিয়া দেখেছে ভারতে কত মৃত্যু। কিন্তু আমাদেরকে যেতে দিচ্ছে না। মন্ত্রী বলেন, আমাদেরকে যেতে দিচ্ছে না ভালো কথা, কিন্তু আপনার নাগরিক যারা এই দেশে আটকা আছেন তাদেরকে নিচ্ছেন না কেন?

XS
SM
MD
LG