ভারতের নির্বাচন কমিশন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে একটি চিঠি পাঠিয়ে লিখিতভাবে জানতে চেয়েছে, রাজ্যের নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম কেমন করে একই সঙ্গে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান পদেও রয়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে, লাভজনক এই দুটি পদে একই ব্যক্তি থাকলে এবং যে পদদুটি পরস্পরের সঙ্গে জড়িত, তাতে রাজ্যের স্বার্থ বিঘ্নিত হতে পারে কিনা। নির্বাচন কমিশন এও জানতে চেয়েছে যে, তা হলে ফিরহাদ হাকিম স্বার্থের সংঘাত এড়াতে বিধায়ক পদ ত্যাগ করে মন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেবেন কিনা। কবে পুরসভার ওই বোর্ড গঠন করা হয়েছে, হাকিমকে ওই পদে বসানোর জন্য রাজ্য সরকারের কোনও নির্দেশ ছিল কিনা, এই সব তথ্যও কমিশন জানতে চায়। মুখ্যসচিব এই চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন, বলেছেন আমরা সব দিক খতিয়ে উত্তর দেব। তবে ফিরহাদ হাকিম যিনি আর কিছুদিন আগেও কলকাতার মেয়র পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, তিনি এ ব্যাপারে কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
উল্লেখ করা যেতে পারে, করোনা পরিস্থিতিতে পুরসভার ভোট অনির্দিষ্টকাল পিছিয়ে যাওয়ার কারণে পুরসভার আইন অনুযায়ী এখন কেউ মেয়র কিংবা মেয়র পারিষদ পদে থাকতে পারেন না। শুধু কাজ চালানোর জন্য এ বছরের গোড়ায় কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশন বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরস্ গঠন করা হয়েছে। এখন সেটিই চালু আছে এবং আদালতের নির্দেশে পদাধিকারবলে প্রাক্তন মেয়র ফিরহাদ হাকিম ওই বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োজিত রয়েছেন। হাকিম বলেছেন, এতে কোনও স্বার্থের সংঘাত ঘটছে বলে আমি মনে করি না, কারণ পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে আমি কোনও বেতন নিই না, পুরসভার গাড়িও ব্যবহার করিনা এবং ওই পদে থাকার জন্য বিশেষ কোনও সুযোগ-সুবিধা নিই না। আমি জনস্বার্থে এই কাজ করছি বলতে পারেন। আমার নগরোন্নয়ন মন্ত্রীর পদ আলাদাভাবে বিচার্য হওয়া উচিত। আমি একটি পদ থেকে বেতন নিচ্ছি বলে অন্যটি থেকে বেতন নিচ্ছি না, সুতরাং স্বার্থের সংঘাত হচ্ছে না। তিনি আরও বলেছেন, দুর্ভাগ্যবশত পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল নিরপেক্ষ নন। তিনি বিজেপির সদস্য হিসেবে দলীয় স্বার্থে কাজ করেন। কেন্দ্রে বিজেপি সরকার নানা রকম ভাবে বিভিন্ন রাজ্যে বিরোধী সরকারগুলোকে হেনস্থা করার চেষ্টা করে থাকে। এক্ষেত্রে রাজ্যপালের প্ররোচনায় নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে এটা করানো পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকারকে হেনস্থা করার আর একটা কৌশল ছাড়া কিছু নয়।