আজকের অতিথি মিঃ সুমেরু রায় চৌধুরী একজন স্থপতি ও কর্মজীবনে ভারতের কেন্দ্রীয় পূর্ত বিভাগ সংস্থা, Central Public Works Department এর প্রধান স্থপতি পদে থাকাকালীন অবসরগ্রহণ করেন। তারপর তিনি অধ্যাপনা এবং আরও বিভিন্ন ধরনের নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। বর্তমানে তিনি কলকাতায় বসবাস করছেন এবং সাম্প্রতিক COVID-19 এর কারণে লক ডাউনের জন্য নির্মাণ শিল্পের উপর তার প্রভাব সম্বন্ধে সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করেছেন।
কলকাতা এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় নির্মাণ কাজের ক্ষেত্রে যে সব কাজকর্ম চলছিল ভারতবর্ষ জুড়ে এই সম্পূর্ণ লক ডাউন ঘোষণা সামগ্রিকভাবে তার উপর কি প্রভাব ফেলতে পারে, এর উত্তরে তিনি আমাদের জানালেন যে, করোনাভাইরাস মহামারী জনিত কারণে ২১ দিনের লকডাউনের পরিপ্রেক্ষিতে সমস্ত , সাইটগুলিতে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে এবং প্রায় দুই সপ্তাহেই ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।উদাহরণস্বরুপ তিনি শহর কলকাতার হাওড়ায় একটি অবসারভেসন টাওয়ার তৈরির কথা উল্লেখ করেন যেটির উচ্চতা হল ১১৫ মিটার এবং যার কাজ প্রায় দুই- তৃতীয়াংশ শেষ হয়ে গিয়েছিল।
দ্বিতীয় প্রশ্ন, নির্মাণ কাজের ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারী ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে ঠিকাদার অথবা Contractor কর্মীদের নিয়োগ করা হয় এবং এই সব কর্মীরা ঘণ্টা হিসেবে তাদের পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন। সুতরাং লকডাউন হওয়ার ফলে তাদের আর কাজে আস্তে দেওয়া হচ্ছে না, সেক্ষেত্রে তাদের সংসার চলছে কিভাবে? সরকারের তরফ থেকে তাদের কি কোন সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে?
উত্তরে তিনি বলেন যে এই সব ঠিকাদার কর্মীদের অনেক সময় থাকতে দেওয়া হচ্ছে না এবং তাদের বাড়ি চলে যেতে বলা হচ্ছে যার ফলে অনেকেই পায়ে হেঁটেই নিজেদের গ্রামের দিক রওনা দিচ্ছেন। পরিবহণ ব্যাবস্থা চালু না থাকার কারণে তাদের অনেক ধরণের অসুবিধের সম্মুখীন হতে হচ্ছে এবং তারা মাইনেও পাছেন না।
তৃতীয় প্রশ্ন, যে কোন বড় নির্মাণ কাজের একটি Schedule থাকে, অর্থাৎ সমগ্র প্রকল্পটি তৈরি করতে একটি সময়সূচী ধার্য করা হয়, এবং বিভিন্ন পর্যায়ের শেষে একটি করে মাইল স্টোন থাকে, এবং এগুলি সম্পন্ন করতে পারলে প্রকল্পটি সময়মত শেষ করাও সম্ভব হয়। সুতরাং এই লকডাউনের কারণে হঠাৎ করে কাজ বন্ধ হয়ে গেলে, ব্যয় অনেক বেড়ে যাবে(Cost Overrun) এবং প্রকল্পটি নিদিষ্ট সময়ে শেষ করাও অসম্ভব হয়ে উঠবে অর্থাৎ প্রকল্পটি পিছিয়ে পড়বে (Behind Schedule)এবং সেক্ষেত্রে এই অতিরিক্ত টাকা কথা থেকে আসবে?
উত্তরে তিনি বলেন, এ প্রশ্নের জবাব দেওয়া খুবই কঠিন কেননা, কবে যে এই লক ডাউন উঠবে তার কোন ঠিক নেই এমনকি কিভাবে উঠানো তাও এখনও অনিশ্চিত, সুতরাং অপেক্ষা করা ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই।
ভয়েস অফ অ্যামেরিকার বাংলা বিভাগের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন জয়তী দাশগুপ্ত।